প্রতিটি প্রাণী মরণশীল। মহান আল্লাহর এই নিয়মে প্রত্যেক মানুষকেই চলে যেতে হয়। তাই মৃত্যুর আগে মানুষকে তার আখিরাতের সফরের প্রস্তুতি নিতে হয়। আবার আত্মীয় বা প্রিয়জন মারা গেলে তাকে সঠিকভাবে বিদায় জানাতে হয়।
যেমন—কোনো ব্যক্তি মারা গেলে প্রথমত তার জন্য জীবিতদের চারটি কাজ করতে হয়—১. মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়া,
২. কাফনের ব্যবস্থা করা, ৩. জানাজা দেওয়া ও ৪. দাফন করা।
কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার আত্মীয়-স্বজনদের কাজ হলো তাকে যত দ্রুত সম্ভব উপরোক্ত কাজগুলো করে মহান আল্লাহর কাছে সোপর্দ করা। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা জানাজা নিয়ে দ্রুত গতিতে চলো। যদি সে ভালো লোক হয় তাহলে তোমরা তাকে কল্যাণের দিকে দ্রুত এগিয়ে দিচ্ছ।
আর যদি সে ভালো লোক না হয়, তাহলে একটা আপদ তোমাদের কাঁধ থেকে দ্রুত সরিয়ে ফেলছ।’ (বুখারি, হাদিস : ১৩১৫)
কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় দূর-দূরান্তের আত্মীয়-স্বজন ও প্রবাস থেকে রওনা হওয়া নিকটাত্মীয়দের পৌঁছানোর অপেক্ষায় লাশ দুই তিন-দিন ফ্রিজিং করে রাখা হয়, এতে দাফন কাজ বিলম্বিত হয়, যা মৃতকে কষ্ট দেওয়ার শামিল। জীবিতদের উচিত এ ধরনের কাজ বর্জনে আপ্রাণ চেষ্টা করা। প্রয়োজনে যেসব নিকটাত্মীয় আসতে খুব বেশি দেরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাদের বুঝিয়ে নির্দিষ্ট সময়েই লাশ দাফন করে ফেলার চেষ্টা করা।
আবার অনেক ক্ষেত্রে জানাজার আগে লাশ সামনে রেখে লম্বা সময় ওয়াজ নসিহত করা হয়, বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্য নেওয়া ও মৃত ব্যক্তির স্মৃতিচারণা করে জানাজার নামাজকে বিলম্ব করা হয়, একটিও সুন্নাহবিরোধী কাজ।
রাসুলুল্লাহ (সা.) হজরত আলী (রা.)-কে বলেন, ‘আলী! তিনটি জিনিস বিলম্বিত কোরো না—নামাজ, যখন এর সময় হয়ে যায়; জানাজার নামাজ এবং উপযুক্ত পাত্র পাওয়া গেলে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া।’
(তিরমিজি, হাদিস : ১০৭৫)
জানাজা শেষে লাশ দ্রুত কবরস্থানের দিকে নিয়ে যাওয়া এবং জানাজার সঙ্গে হেঁটে যাওয়া সুন্নত। জানাজার পেছনে থাকা উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যারা বাহনে চড়ে যাবে তারা জানাজার পেছনে চলবে।’ তবে হেঁটে যাওয়া উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) দেখেছেন, ফেরেশতারাও জানাজায় হেঁটে চলেছেন।
(আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৬৩)
লেখক : খতিব, টোলারবাগ কেন্দ্রীয় মসজিদ, মিরপুর-১, ঢাকা
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ