বরিশাল নগরীর পলাশপুর কাজীর গোরস্থান থেকে উত্তরে সদর উপজেলার লামছড়ি পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকায় কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন প্রতিরোধে সম্প্রতি ৩৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। এতে ওই এলাকার মানুষের মাঝে খুশির জোয়ার বইলেও ভাঙন আতংক আর সম্পদ হারানোর চাপা কান্নায় দিন কাটে কীর্তনখোলা তীরবর্তী নগরীর দক্ষিণ রূপাতলী এলাকায়।
গত কয়েক মাসে কীর্তনখোলার গর্ভে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, বাগান, গোরস্থানসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ বিলীন হয়ে যাওয়ায় নিঃস্ব-সর্বহারা হয়ে গেছে দক্ষিণ রূপাতলীর মানুষ। শুধু বসতবাড়ি-ফসলী জমিই নয়, নদী ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে বরিশাল-কুয়াকাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত (দপদপিয়া) সেতুও। এখনই ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে দক্ষিন রূপাতলী আর ঝুঁকিতে পড়তে পারে দপদপিয়া সেতু।
যদিও ওই এলাকা পরিদর্শন করে কীর্তনখোলার ভাঙন থেকে নগরীর দক্ষিন রূপাতলী রক্ষায় পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রমজান আলী প্রামানিক।
কীর্তনখোলা নদীর ভাঙনে গত কয়েক মাসে বিলীন হয়ে গেছে দক্ষিণ রূপাতলীর বিস্তির্ন ফসলি জমি, রাস্তা, বসত বাড়ি, বাগান সহ কোটি কোটির টাকার সম্পদ। এতে নিঃস্ব হয়ে গেছে বহু পরিবার। নদী ভাঙন দোড়গোড়ায় এসে পৌঁছায় শেষ সম্বল নিয়ে ওই এলাকার অনেক পরিবার দুশ্চিন্তায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম।
এছাড়া নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে বরিশাল-কুয়াকাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত (দপদপিয়া) সেতুও। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে বরিশাল থেকে সড়ক পথে কুয়াকাটার সড়ক যোগাযোগও অচিরেই ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে আশংকা স্থানীয় জাহাঙ্গীর খাঁ, হানিফ খাঁ, কবির খলিফা, এস্কেন্দার খলিফারসহ অনেকের।
তারা জানান, নদীতে পূর্ব পুরুষের ভিটেমাটি হারিয়ে গেছে। এখন অবশিস্ট বসতবাড়ি যে কোন সময় নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। ভাঙন আতংকে রাতে ঠিকমতো ঘুমও হয়না নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের।
কীর্তনখোলা নদী ভাঙনের ভয়াবহতার খবর পেয়ে সম্প্রতি নগরীর দক্ষিন রূপাতলী এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রমজান আলী প্রমানিক। তিনি বলেন, নদী ভাঙন দপদপিয়া সেতুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সেতু রক্ষায় সড়ক বিভাগের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সড়ক বিভাগের সাথে কথা বলার পাশাপাশি পাউবো’র পক্ষ থেকে এলাকাবাসীর সহায়-সম্বল রক্ষায় নদী ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন রমজান আলী প্রামানিক।
বিডি প্রতিদিন/১৭ নভেম্বর ২০১৭/হিমেল