বরিশালের ইনস্টিটিউট অব হেলথ এন্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তারকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় নিয়ে গণধর্ষণের পর হত্যা মামলার প্রধান আসামি সিরাজুল ইসলাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল মেডিকেলে মারা গেছে। শনিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। ময়না তদন্তের জন্য তার লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। বরিশাল জেলখানা থেকে সিরাজকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছিল।
শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত ৮ ডিসেম্বর রাত ৮টা ১০ মিনিটে বরিশাল কেন্দ্রিয় কারাগার থেকে অসুস্থাবস্থায় সিরাজকে শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। ১০ ডিসেম্বর রাত ১টা ৩০মিনিটে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর প্রমাণ পত্রে “ফিজিক্যাল এ্যাসল্ট” শব্দটি উল্লেখ রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছে পুলিশ।
গত ৩ ডিসেম্বর সিরাজুল ইসলামকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পিরোজপুর থেকে তাকে বরিশাল নেওয়া হয় ৪ ডিসেম্বর এবং আদালতে সোপর্দ করা হয় ৫ ডিসেম্বর। ৫ ডিসেম্বর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি আদালতে প্রদানের পর সিরাজকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এরপর ৮ ডিসেম্বর অসুস্থাবস্থায় কারাগার কর্তৃপক্ষ বরিশাল সিরাজকে মেডিকেলে ভর্তি করে। গত রাত (শনিবার দিবাগত) দেড়টায় তার মৃত্যু হয়।
গত ১৯ নভেম্বর বরিশালের বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউট অব হেলথ এন্ড টেকনোলজি’র (আইএইচটি) শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তারকে প্রেমের অভিনয় করে বরিশাল থেকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় নিয়ে যায় সিরাজ। ওইদিন রাত ১০টার দিকে সিরাজ তার সহযোগী নাজমুল ইসলাম নয়ন এবং হাফিজ শিক্ষার্থী সাদিয়াকে পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তার লাশ বলেশ্বর নদীতে ফেলে দেয় তারা। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সিরাজুল ইসলাম ও মো. হাফিজুরকে ঘটনার ১৩দিন পর ৩ডিসেম্বর পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার করে। এরআগে ২ ডিসেম্বর বরিশালের কোতয়ালী থানায় সিরাজ সহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে সাদিয়ার বাবা আলমগীর খান বরিশাল কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে পুলিশের হেফাজতে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার ফরহাদ সরদার।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার