চলতি এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময় পরীক্ষার কক্ষে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে একদল উশৃঙ্খল পরীক্ষার্থী নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে।
বৃহস্পতিবার পরীক্ষা শেষে বেলা ১টা থেকে প্রায় ২টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী দুই শতাধিক পরীক্ষার্থী এ ভাঙচুর ও তান্ডব চালায়। এতে কলেজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
খবর পেয়ে র্যাব-১১ ও সুধারাম থানার ওসি মোঃআনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময়ঘ টনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে পুলিশ ৭শিক্ষার্থীকে আটক করে। এ ঘটনায় মহিলা কলেজ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার বৃহস্পতিবার ছিল শেষ দিন। নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ছিল বিজ্ঞান বিভাগের উচ্চতরগণিত ও ব্যবসা শিক্ষা শাখার উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপনন বিষয়ের পরীক্ষা। নোয়াখালী সরকারি কলেজ ও সোনাপুর কলেজের ১ হাজার ৮৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক ও মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক মুশফিকুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক নূরুলহুদা সোহাগসহ অন্যান্য শিক্ষকরা বলেন, পরীক্ষা রশুরু থেকেই শিক্ষার্থীরা কক্ষের মধ্যে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে শিক্ষকদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পরীক্ষা শেষে বেলা ১টার দিকে কয়েকশ শিক্ষার্থী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লাঠিসোটা ও ইট পাটকেল নিয়ে কলেজে হামলা চালায়।
হামলাকারীরা কলেজের প্রধান ফটক ও ছাত্রী নিবাসের ফটকে তালা ঝুলিয়ে হামলা চালায়।
এ সময় কলেজের বিজ্ঞানভবনের, শিক্ষক মিলনায়তন ও মসজিদের ওপর হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন বিভাগের পরীক্ষাগার (ল্যাবরেটরী) কক্ষ, আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি এবংশিক্ষক মিলনায়তনের আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ভেঙ্গে তছনছ করে দেয়।
শিক্ষকদের লক্ষ্য হামলাকারী ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে শিক্ষক মিলনায়তনের জানালার কাঁচ ভেঙ্গে ৪-৫ জন শিক্ষকআহতহন। প্রাণ ভয়ে নারী শিক্ষকরা চিৎকার করেন। হামলার সময় পরীক্ষা দিতে আসা ৩ শতাধিক নারী শিক্ষার্থীও আটকাপড়েন। প্রায় ঘন্টাব্যাপী এই তান্ডব চালিয়ে হামলাকারীরা কলেজের ২২টি কক্ষ, আসবাবপত্র ও জানালার কাঁচ ভাঙচুর করে।
কলেজের অধ্যক্ষ আক্তারী বেগম বলেন, হামলার ঘটনার শুরুতেই সুধারাম থানা পুলিশকে ফোন করা হলেও মহিলা কলেজে পুলিশের আসতে ৫০ মিনিট সময় লেগেছে। পুলিশ ফোনের গুরুত্ব দিয়ে আরও আগে আসলে কলেজের এত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হত না।
কলেজ অধ্যক্ষের এ অভিযোগ অস্বীকার করে সুধারাম থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবংঘটনাস্থল থেকে ৭ শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিডি প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর