ভারতের রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকরের ঠিক দুই দিন আগে সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, কৃষক ও ক্ষুদ্র শিল্পের স্বার্থে তার সরকার কোনো আপস করবে না। তিনি সতর্ক করে বলেন, আমাদের ওপর চাপ বাড়তে পারে, তবে আমরা তা সহ্য করব।
এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। এর মধ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে রাশিয়ার কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার কারণে।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ক্রুড অয়েল আমদানিকারক দেশ ভারতকে ২৭ আগস্টের মধ্যে বিকল্প উৎস খুঁজে বের করতে বলা হয়েছে। বর্তমানে ভারতের মোট তেলের এক-তৃতীয়াংশ রাশিয়া থেকে আমদানি হয়। রুশ তেল আমদানি করে ভারত কয়েক বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করেছে, যা দেশটির জ্বালানির বাজারকে স্থিতিশীল রেখেছে। কিন্তু এখন সরবরাহকারীর পরিবর্তন করলে দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে, তা না করলে ভারতের রপ্তানি খাত বড় ধাক্কা খাবে।
নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপকে “অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেছে। এদিন অহমেদাবাদে এক জনসভায় মোদি বলেন, আজ বিশ্বজুড়ে সবাই অর্থনৈতিক স্বার্থকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করছে। এই গান্ধির ভূমি থেকে আমি আমার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, দোকানদার ভাই-বোনদের, কৃষক ভাই-বোনদের, পশুপালক ভাই-বোনদের বলছি, আপনাদের স্বার্থই মোদির কাছে সবার আগে। বারবার আপনাদের আশ্বস্ত করছি, আপনাদের স্বার্থ রক্ষায় আমি আপস করব না।
তিনি আরও বলেন, আমার সরকার কখনোই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, কৃষক ও পশুপালকদের ক্ষতি হতে দেবে না। যত চাপই আসুক, আমরা নিজেদের শক্তি আরও বাড়াব।
এ সময় মোদি দেশবাসীকে স্বদেশি পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের সবার উচিত কেবলমাত্র ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ পণ্য কেনা। ব্যবসায়ীদের দোকানের বাইরে বড় বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া উচিত যে, তারা কেবলমাত্র স্বদেশি পণ্য বিক্রি করেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক ভারতের বিভিন্ন শিল্পকে ধসের মুখে ফেলতে পারে। ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর উর্জিত প্যাটেল ট্রাম্পের হুমকিকে ভারতের জন্য “সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন” আখ্যা দিয়েছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, চুক্তি না হলে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হবে এবং এর ফলে ক্ষতি অনিবার্য। সূত্র : এনডিটিভি।
বিড-প্রতিদিন/শআ