ওয়াসার পানি সরবরাহের পাইপ ফেটেছে মাটির নিচে। সেখান থেকে পানি বেরিয়ে দ্রুত প্রবাহিত হচ্ছে পাশের ড্রেনে। রবিবার সকাল ৯টায় সেখান থেকে ড্রেনে পানিপ্রবাহের ৫ ফুট দূরে আধা লিটারের প্লাস্টিকের বোতল ধরলে দেড় মিনিটে ভর্তি হয়ে যায়। তাহলে ১ ঘণ্টায় ২০ লিটার। এমনভাবে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় ২৪০ লিটার পানি অপচয় হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, পানি অপচয় বন্ধে ভ্রুক্ষেপ নেই ওয়াসার।
রাজশাহী মহানগরীর বুধপাড়া গনির মোড়ের নাজমুল ও আলম হোসেনের বাড়ির সড়কের পাশে এমন চিত্র দেখা গেছে। স্থানীয়রা জানান, তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে প্রায় তিন বছর আগে পাকা সড়ক হয়। সড়কের নিচে পড়ে যায় ওয়াসার পানির পাইপ। সে সময় পাইপটি ফেটে যায়। ওয়াসার লোকজন এসে মেরামত করে গিয়েছিল, কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। বরং ফাটল প্রসারিত হয়েছে। স্থানীয়রা ওয়াসায় কয়েক দফা অভিযোগও জানায়, তাতে কাজ হয়নি। ফলে এক বছরের বেশি এভাবে পানি ড্রেনে পড়ছে।
রাজশাহী ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ৩ কোটি লিটার পানি অপচয় হয়। এর মধ্যে চুরি সংযোগ ছাড়াও পাইপ লিকেজের বিষয় অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া অনেক বস্তি এলাকায় ওয়াসার পানি ব্যবহার হয়। সে পানির বিল পায় না ওয়াসা। বিল না পাওয়া পানিকে অপচয় বলছে ওয়াসা। যা মোট পানির সরবরাহের ২৮ শতাংশ। প্রতিদিন সকাল ৬টায় ওয়াসার পানি সরবরাহ পাম্প চালু করা হয়। চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ওয়াসার কর্মকর্তাদের দাবি, ১২ ঘণ্টা চলে পানি সরবরাহের পাম্প। রাজশাহী ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী পারভেজ মামুদ বলেন, ‘রাজশাহী মহানগরীতে প্রতিদিন পানির চাহিদা ১৩ কোটি লিটার। ওয়াসা সরবরাহ করে ১০ কোটি ৭০ লাখ লিটার। এর মধ্যে ৩ কোটি লিটার বিল পায় না ওয়াসা। সেগুলো লাইন লিকেজ ছাড়াও চুরি হয়। যাকে অপচয় বলা হয়। যা মোট সরবরাহের ২৮ শতাংশ পানি। অর্থাৎ ৩ কোটি লিটার।’ বুধপাড়ায় পাইপ থেকে পানি বের হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি শুনলাম। দ্রুত লোক পাঠিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ ওয়াসার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চাহিদার ১৩ কোটি লিটারের বিপরীতে সরবরাহ হয় ১০ কোটি ৭০ লাখ লিটার পানি। সেখানে ঘাটতি ২ কোটি ৩০ লাখ লিটার। এর মধ্যে মোট সরবরাহের ২৮ শতাংশ পানি বিভিন্নভাবে অপচয় হয়। তা থেকে ওয়াসা কোনো মূল্য পায় না। এমন পানি ৩ কোটি লিটার। তাহলে রাসিকের ৪০ হাজার গ্রাহক পায় ৫ কোটি ৪০ লাখ লিটার পানি। স্থানীয় রিজভী ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে এমন অবস্থা। সব সময় পানি বের হয়ে ড্রেনে পড়ে। এক বছরের বেশি এমন অবস্থা। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ওয়াসা একবারও মেরামত করতে আসেনি।’