বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটীতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী দিহিদার ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য শেখ শুকুর আলীকে হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দলীয় নেতাকর্মীসহ ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
সোমবার বিকালে প্রকাশ্যে এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে দৈবজ্ঞহাটী বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।
পুলিশ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ‘শহিদুল বাহিনী’র প্রধান দৈবজ্ঞহাটী ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম ফকির, ওই বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডার আবুয়াল হোসেন ফকির, আবুল শেখ ও জুলহাস ডাকুয়া নামে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৮ রাউন্ড গুলি ও ১টি হাত কুড়াল উদ্ধার করা হয়েছে।
এঘটনায় জড়িত অন্য ঘাতকদের গ্রেফতারের পুলিশ ও র্যাবের একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে বলে জেলা পুলিশ নিশ্চিত করেছে। দুপুরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সোমবার বিকালে ইউনিয়ন পরিষদে ধরে এনে ‘বোরখা পরিয়ে’ দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী দিহিদার (৫৩) ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য শেখ শুকুর আলীকে (৪৫) পিটিয়ে, কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এ সময়ে সন্ত্রাসীরা দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়ন তাঁতীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বাবুল শেখ (৪২) ও নিহত আওয়ামী লীগ নেতা আনসার আলীর বাড়ী ভাংচুরসহ তার স্ত্রী মঞ্জু বেগমকে (৪৫) গুরুতর আহত করে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মঞ্জু বেগম ও বাবুল শেখের অবস্থা এখনো আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসরা।
আনসার আলী দিহিদারের লাশে ময়নাতদন্ত মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ শুকুর আলীর লাশের ময়নাতদন্ত বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন হয়েছে।
হতাহতরা সবাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বাগেরহাট- ৪ (মোড়েলগঞ্জ-শরনখোলা) আসনের আওয়ামী লীগের মনোয়ন প্রত্যাশী এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের সমর্থক।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় জানান, সোমবার বিকালে দৈজ্ঞহাটি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ফকিরকে হত্যার প্রচেষ্টার একটা মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে দেয়। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন আওয়ামী লীগ নেতা আনছার আলী দিহিদার, যুবলীগ সদস্য শুকুর শেখ ও তাঁতী লীগ নেতা বাবুল শেখকে ইউনিয়ন পরিষদে ধরে এনে কুপিয়ে-পিটিয়ে ও গুলি করে গুরুতর আহত করে। আহতদের মধ্যে আনছার আলীকে খুলনা মেডিকেলে ও শুকুর শেখকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আওয়ামী লীগের এই দুই নেতা হত্যার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুলসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। এঘটনার সাথে জড়িত অন্য সন্ত্রাসীদের আটকে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম কাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা