টাঙ্গাইলে চাঞ্চল্যকর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আমানুর রহমান খান রানাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল আদালতে হাজিরা দিতে এসে তিনি অসুস্থ্যবোধ করলে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার উপস্থিতিতে আরও একজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। পরে জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মাকসুদা খানম আগামী ৪ এপ্রিল মামলার পরবর্তী সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করেন।
আদালত পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সাবেক এমপি রানাকে টাঙ্গাইলের বিচারিক আদালতে আনা হয়। পরে ১১টা ১০ মিনিটে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মাকসুদা খানম এ চাঞ্চল্যকর মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলার সাক্ষী ওই টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আশরাফ আলী ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাজমুল হুদা নবীনের স্বাক্ষ্য প্রদানের দিন ধার্য ছিল। আশরাফ আলী অসুস্থ্য থাকায় স্বাক্ষ্য দিতে আসেননি। অপর স্বাক্ষী নাজমুল হুদা নবীন স্বাক্ষী প্রদান করেন। পরে বিচারক আগামী ৪ এপ্রিল এই মামলার অন্যান্য স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহনের দিন ধার্য করেন। এই স্বাক্ষীসহ আদালতে মোট ১৪জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত হলো।
এদিকে, স্বাক্ষ্য গ্রহনের পর বেলা দেড়টার দিকে রানা অসুস্থ্যবোধ করলে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপতালের তত্বাবধায়ক নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, তার উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রয়েছে। রক্ত উঠানামা করছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে এবং ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এমপি রানা ও তার তিনভাইসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর সাবেক এমপি রানা গত ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এই আদালতেই আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বেশ কয়েক দফা উচ্চ আদালত ও নিন্ম আদালতে আবেদন করেও তিনি জামিন পানন। তার বাবা আতাউর রহমান খান আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে এবার টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর