লক্ষ্মীপুরের প্রভাবশালীদের দখল ও দূষণের প্রভাবে রামগতি কমলনগরের জারিদোনা খালসহ জেলার ৭৬টি খাল এখন সংকীর্ণ ও পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। অবাধে খাল দখল করে দোকান পাট, বাড়ি ঘর নির্মাণ, ময়লা আবর্জনা ফেলে পানির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে নৌযান চলাচল হচ্ছে না যেমনি তেমনি কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে এ অঞ্চলে। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি, দেশীয় মাছ ধরাসহ নানা সুবিধা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন এ অঞ্চলের লাখো মানুষ।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার জারির দোনা খালের আশির দশকেও বড় বড় নৌকা ও বিভিন্ন পন্য আনা নেওয়া হতো এ খাল দিয়ে। খালটি কমলনগরের চর কাদিরা ইউনিয়নের ভলুয়া নদী থেকে শুরু হয়ে হাজির হাট, ফলকন, রামগতির চর বাদাম হয়ে মেঘনায় মিলিত হয়। যার গড় প্রস্থ ছিল ৩৪ ফুট। বর্তমানে খালের চিহ্ন ও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
সরেজমিন কমলনগরের হাজির হাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে খাল দখল করে দোকান পাট, ঘর বাড়ী নির্মাণ করে আছেন। আশে পাশে দখল ও দূষনের ফলে নালা ও নর্দমায় পরিণত হয়েছে খালটি। এ খালটির মতো জেলা আরো ৭৬টি খালের বেশীর ভাগ খালের বর্তমানে এমনি অবস্থা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দখলদাররা অবাধে দখল উৎসবে মেতে উঠেছেন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। একইভাবে জেলার কমলনগরের মুছার খাল, যেটির তোরাবগঞ্জ অংশে দখল হয়ে গেছে, একই উপজেলার তুলা তুলি খালের পূর্ব চর লরেন্স বাজারে দখল হয়ে গেছে। একইভাবে সদরের গরুর খাল, ভবানীগঞ্জ খাল, জিয়ার খাল, রামগতির কাটার খাল, রামগঞ্জের বেড়ীর খালসহ সবকয়টি খালই দখল দুষণে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে এখন।
ফলে খালগুলোর পানি ব্যবহার, কৃষি কাজে পানি না পাওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়া, দেশীয় মাছ ধরতে না পারা ও নৌ চলাচল বন্ধসহ বর্ষাকালে জলাবদ্ধতায় এ অঞ্চলের বাসিন্দারা সুবিধা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন।
তাদের দাবী খালগুলো খনন করে স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে দেয়া হলে ও দখল উচ্ছেদ করে প্রতিবন্ধকতা দূর করে দেয়া দরকার। ফলে এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জীবন মানের পরিবর্তন ঘটবে অনেকটাই।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকেশীলী মোহাম্মদ মুসা দায়িত্ব পালনে নিজেরা সজাগ রয়েছেন জানিয়ে বলেন, খালগুলোর দখল উচ্ছেদের বিষয়ে সরকারি বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্ধ ফেলে দখল উচ্ছেদ ও খনন কাজ শুরু হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার