হাসানপুর। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার একটি গ্রাম। গ্রামের ঈদগাহের পাশে খামারটির অবস্থান। উঠানে, পুকুরপাড়ে ৩০ প্রকারের ফলের মেলা বসেছে। রয়েছে ১০ জাতের আম। আমগুলোর নামও বিচিত্র। ব্রুনাই কিং, কিউ জাই, বানানা, থাই পেয়ারা, ডক মাই,কাটিমন, আম্রপালি, বারি-০৪, হাড়ি ভাঙ্গা ও ফজলি।
এছাড়া এখানে হাঁস-মুরগি ও মাছের খামার গড়ে উঠেছে। গ্রামের মোস্তাক মিয়া ও মাহমুদা হায়দার চৌধুরী কনক দম্পতি এই খামার গড়ে তোলেন। তাদের দেখে অন্যরাও সমন্বিত খামার গড়ে তোলায় আগ্রহী হচ্ছেন। আশ-পাশের গ্রামের বাসিন্দারা প্রতিদিনই খামারটি দেখতে ভিড় জামান।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে দাউদকান্দি উপজেলার হাসানপুর ডিগ্রি কলেজ। কলেজের পাশ ঘেঁষে একটি সড়ক গ্রামে প্রবেশ করেছে। অল্প সামনে গেলেই সড়কের পূর্ব পাশে বাড়িটি। বাগানে আমের ভারে ডাল ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম। ব্রুনাই কিংয়ের ওজন ৫ কেজির কাছাকাছি। থাই পেয়ারা দেখতে পেয়ারার মতো। কোনো গুলো দেখতে বাংলা পাঁচ। যেন গাছে ঝুলছে কতগুলো পাঁচ। বাগানে, বিশ্রাম কক্ষের সামনে, পুকুর পাড়ে আমের সমাহার। এছাড়া জাম, পেয়ারা,ডালিম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, জামরুল, করমচা, ঢেউয়া, নারিকেল, লেবু, জাম্বুরা, সজনে রয়েছে। পুকুরে রয়েছে মাছ,খোয়াড়ে হাঁস-মুরগি,কবুতর ও গোয়ালে ছাগল পালন করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সবজির চাষ করা হয়েছে।
মাহমুদা হায়দার চৌধুরী কনক জানান, এখানে দুই একর জমি। বাগানে দুই শতাধিক আম গাছ রয়েছে। রয়েছে অন্যান্য ফল। বিভিন্ন নার্সারি, অনলাইন ও কৃষি বিভাগ থেকে চারা সংগ্রহ করি। ২০১৮ সালে গাছ লাগাই। ২১ সাল থেকে ফল আসছে। ভালো ফলন পেয়েছি। ফল স্বজনদের মাঝে বিতরণ করেছি। সামনে হয়তো বাণিজ্যিক চিন্তা করবো। এছাড়া হাঁস,মুরগি ও মাছের চাষ করা হচ্ছে।
দর্শনার্থী ইমতিয়াজ হাসান ইমন ও মো. মাজেদ বলেন, এখানে ব্যতিক্রম জাতের আমসহ বিভিন্ন ফলের চাষ হয়। আমরা প্রায় সময় বাগানটি দেখতে আসি। বাগান ও খামার দেখে ভালো সময় কাটে।
কুমিল্লা গার্ডেনার্স সোসাইটির পরিচালক ডা. আবু নাঈম বলেন, মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ফলের চাষ বাড়াতে হবে। হাসানপুর গ্রামের উদ্যোক্তাদের এই উদ্যোগ প্রশংসীয়। তাদের দেখে অন্যরাও উৎসাহিত হচ্ছে।
স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. বাছির হোসেন বলেন, উপজেলায় পরিবার কেন্দ্রিক ফলের চাষ বাড়ছে। এটি উপজেলার বড় বাগান। সাথে তারা হাঁস ও মাছের চাষ করছেন। আমরা বিভিন্ন সময় তাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি।
বিডি প্রতিদিন/এএম