শিরোনাম
২৬ মে, ২০১৯ ২২:২৩

স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে স্বামীর বাড়িতে দুই সন্তান নিয়ে গৃহবধূ

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে স্বামীর বাড়িতে দুই সন্তান নিয়ে গৃহবধূ

স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে স্বামীর বাড়িতে দুই সন্তান নিয়ে দুইদিন যাবত অবস্থান করছেন শিখা রানী মন্ডল (৩৫) নামের এক গৃহবধূ। তবে স্বামী টুটুল মন্ডল ও তার পরিবার শিখাকে মেনে নিচ্ছে না। তাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও মারধর করে তাড়ানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও শিখা রানী মন্ডল জানান, শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের পূর্বকোটাপাড়া গ্রামের সম্ভু মন্ডলের ছেলে টুটুল মন্ডল প্রায় ১৫ বছর আগে ঢাকার শ্যামবাজার এলাকায় পানের ব্যবসা করতেন। তখন তাদের পানের দোকানে কর্মচারি হিসেবে কাজ করতেন ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার গাজিপুরা গ্রামের সামসুুদ্দিন বেপারীর মেয়ে আল্লাদি আক্তার। সেই আল্লাদির সঙ্গে টুটুল মন্ডলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে আল্লাদি বাবার ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে সনাতন ধর্ম গ্রহণ করেন। তখন আল্লাদির নাম রাখা হয় (শিখা রানী মন্ডল)। পরে ২০০৯ সালে গোপনে তাদের ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিয়ে হয়। প্রায় ১১ বছরের সংসার জীবনে তাদের ঘরে দুটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। বড় মেয়ের নাম রাখা হয় মরশি রানী মন্ডল ও ছোট মেয়ের নাম রাখা হয় অন্তরা রানী মন্ডল।

বিয়ের পর পাঁচ বছর পরিবারকে না জানিয়ে শিখাকে নিয়ে শ্যামবাজারে থাকতেন টুটুল। পরে টুটুলের পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। জানার পর টুটুল বিভিন্ন কাজ দেখিয়ে সম্পর্কের দুরত্ব বাড়াতে থাকে। গত তিন মাস যাবত স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন টুটুল। সেই থেকে শিখা টুটুল মন্ডলের গ্রামের বাড়ির ঠিকানা খুঁজে বেড়াচ্ছেন। পরে খুঁজে পেয়ে গতকাল শনিবার স্বামীর বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার পূর্ব কোটাপাড়া গ্রামে এসে হাজির হন শিখা। এসে দেখেন স্বামী টুটুল আরেকটি বিয়ে করেছেন। অভিযোগ, টুটুল ও তার পরিবার ওই মা-মেয়েদের বিভিন্ন ভয়ভীতি ও মারধর করে তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। 

শিখা রানী বলেন, স্বামীর স্বীকৃতি চাই। সন্তানরা বাবার পরিচয় চায়। আমি সন্তান নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে থাকতে চাই। 

পালং ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান গগন খান বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। এ বিষয় নিয়ে সোমবার স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য বসা হবে।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, আগে সনাতন ধর্মে বিয়েতে রেজিস্ট্রি ছিল না। সেই হিসেবে মন্দিরে তাদের বিয়ে হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন সংসার করেছে। দুটি মেয়ে সন্তানও রয়েছে তাদের। সেই হিসেবে স্ত্রী ও সন্তানের দায়িত্ব নেয়া উচিৎ টুটুলের। যদি না নেয় তাহলে শিখাকে আইনগত সহযোগিতা করা হবে। 

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জানতে পেরে একজন এসআইকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। ওই নারী থানায় এসে অভিযোগ করলে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

বিডি-প্রতিদিন/২৬ জুন, ২০১৯/মাহবুব 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর