২৬ জুন, ২০১৯ ১৯:২৪

পাবনায় যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরির কারখানা সিলগালা, গ্রেফতার ৩

পাবনা প্রতিনিধি :

পাবনায় যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরির কারখানা সিলগালা, গ্রেফতার ৩

পাবনায় যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৩ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে নওগাঁ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। মঙ্গলবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতারের পর কারখানাটি সিলগালা করে দেয়। গত কয়েক বছর ধরে পাবনার বিভিন্ন স্থানে ফ্রুট সিরাপের নামে যৌন উত্তেজক সিরাপ তৈরি করে বাজারজাত করে আসছে একটি চক্র। চক্রটি একটি সমিতির ব্যানারে লাখ লাখ টাকা প্রশাসনকে দিয়ে এই অপকর্ম করে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই সব যৌন উত্তেজক সিরাপ খেয়ে বেকার যুবক থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আসক্ত হয়ে পড়েছে।

নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লিমন রায় বলেন, সম্প্রতি নওগাঁতে যৌন উত্তেজনা বর্ধক সিরাপ পান করার পর এক ব্যক্তি বাড়িতে প্রবেশ করে মেয়ের মাকে হত্যার পর মেয়েকে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচনায় আসার পর  নওগাঁ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পাবনা সদর উপজেলার আফুরিয়া ফাস্ট ফিলিংস নামের ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজা, নজরুলসহ ৩ জনকে গ্রেফতার ও ফ্যাক্টরি সিলগালা করে। 

তিনি আরো জানান, পাবনার ফাস্ট ফিলিংস ফ্যাক্টরিতে দীর্ঘদিন ধরে হট ফিলিংসসহ তিন আইটেমে ড্রিংকস তৈরি করা হচ্ছে, যা দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার মুদির দোকানে বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। ফ্যাক্টরির স্বত্বাধিকারী আরিফুল ইসলাম ও আব্দুর রাজ্জাক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ম্যানেজ করে মানুষের জন্য ক্ষতিকারক এ পানীয় তৈরি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। ফ্যাক্টরির মালিক পাবনার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্র ছায়ায় থাকার কারণে এ বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। 

লিমন রায় জানান, এই ফ্যাক্টরির উৎপাদিত হট ফিলিং ড্রিংকস সেবন করে নওগাঁয় এ পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অনেকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে অতিমুনাফার জন্য পাবনায় একটি চক্র এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। তারা ২২ জনের একটি সমিতি করে এই উত্তেজক সিরাপ তৈরি ও বাজারজাত করছেন। 

এ ব্যাপারে পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর পরিচালক এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, ড্রাগের চেয়েও ক্ষতিকর এই সিরাপটির অন্তত অর্ধশত কারখানা রয়েছে পাবনায়। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে তারা এই সিরাপ তৈরি করে আসছেন। ট্রাক চালক, রিকশা চালক থেকে শুরু করে বেকার যুবক ও শিক্ষার্থীরা এই পণ্যটির ভোক্তা। আমরা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করি। 

এ বিষয়ে পাবনার ডা. রাম দুলাল ভৌমিক বলেন, এ ধরণের মান নিয়ন্ত্রণহীন যৌন উত্তেজক সিরাপ সেবনে তাৎক্ষণিক উত্তেজনা দেখা দিলেও দীর্ঘ মেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে লিভার, কিডনি ড্যামেজের পাশাপাশি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যেতে পারে সেবনকারীরা। এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর নজরদারীর দাবি জানাচ্ছি। 

এ বিষয়ে পাবনার ফাস্ট ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ প্রা. লি. এর স্বত্বাধিকারী আব্দুর রাজ্জাক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এদিকে, পাবনার আনাচে-কানাচে গড়ে ওঠা এ ধরণের কারখানা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পাবনার সচেতন মহল।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর