২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৭:৪৪

কারাগারে কন্যা সন্তান জন্ম দিলেন নুসরাত হত্যা মামলার আসামি মনি

জমির বেগ্, ফেনী প্রতিনিধি

কারাগারে কন্যা সন্তান জন্ম দিলেন নুসরাত হত্যা মামলার আসামি মনি

সংগৃহীত ছবি

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলার কারাবন্দি আসামি কামরুন নাহার মনি কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন। তিনি নুসরাতের সহপাঠী ও বান্ধবী ছিলেন। 

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে একটি কন্যা সন্তানের প্রসব করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আবু তাহের জানান, মা ও মেয়ে দুজনই সুস্থ রয়েছেন। 

জানা যায়, ৬ এপ্রিল গর্ভে সন্তান নিয়েই নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়েছিলেন মনিসহ ৫জন। গত ২১ এপ্রিল শনিবার ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ফেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে মনি এ জবানবন্দি দেন। 

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রামের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। 

একই দিন ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে ১৬৪ ধারার এ জবানবন্দি দেন এ মামলার অন্যতম আসামি জোবায়ের। এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ সুপার মো. ইকবাল বলেন, মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ম্যাচের কাঠি দিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন ধরায় জোবায়ের। রাফিকে ছাদে ডেকে নিয়ে যায় পপি। সেখানে আগে থেকেই জোবায়ের অপেক্ষা করছিলেন। জোবায়েরের সঙ্গে ছিলেন মনি, পপি, শাহাদাত ও জাবেদ। নুসরাত ছাদে এলে তারা তাকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। এতে নুসরাত রাজি না হলে তার হাত-পা বেঁধে ছাদে শুইয়ে দেয়। এরপর তা পা চেপে ধরেন পপি, মুখ চেপে ধরেন শাহাদাত, মনি বুক চেপে ধরেন, জাবেদ কেরোসিন ঢালেন এবং  জোবায়ের দিয়াশলাই দিয়ে গায়ে আগুন ধরান। নুসরাত জাহান রাফি হত্যার কিলিং মিশনে সরাসরি জড়িত ছিল কামরুন নাহার মনি। নুসরাতের বুকসহ শরীর চেপে ধরেন এবং তিনি বোরকা ব্যবস্থা করে দেন। নুসরাতের পা বেঁধে চলে যাওয়ার সময় মনি তাকে শম্পা বলে ডাকে।

প্রসঙ্গত, সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতকে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। মামলাটি তুলে না নেওয়ায় গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে নুসরাতকে কৌশলে ডেকে পাশের ভবনের তিন তলার ছাদে নিয়ে সিরাজ উদ দৌলার সহযোগীরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুবরণ করেন নুসরাত। এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। এদের মধ্যে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১২ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর