মরণব্যাধি জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধে ভোলায় ''ব্যাপক হারে কুকুর টিকাদান কার্যক্রম অবহিতকরণ সভা'' অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডাক্তার ফারজানা খানম।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন। এ সময় জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার ইন্দ্রজীত কুমার মন্ডল, জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খলিলুর রহমান, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার দীনেশ চন্দ্র মজুমদার, স্বাস্থ্য ও প্রাণী সম্পদ বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রগ্রামের সুপার ভাইজার মো. কামরুজ্জামান জানান, জলাতঙ্ক একটি মরণব্যাধি। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু শতভাগ নিশ্চিত। কুকুর, বিড়াল, শেয়াল, বেজি এবং বাদুরের কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ ছড়ায়। তাই এসব প্রাণী থেকে সাবধান থাকতে হবে। তবে কাউকে কুকুর বেড়ালে কামড় দিলে সাথে সাথে ক্ষতস্থানে কাপড়কাচা সাবান দিয়ে ১৫-২০ মিনিট ধরে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং দ্রুত নিকটবর্তী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
কামরুজ্জামান জানান, বাংলাদেশ থেকে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের লক্ষে ২০১০ সাল থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত উদ্যোগে জাতীয় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মূল কর্মসূচি বাস্তায়ন করা হচ্ছে। এই কমূসূচির আওতায় দেশের সবগুলো জেলাসহ মোট ৬৭টি জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মূল কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে কুকুরে কামড়ে আক্রান্ত রোগীর আধুনিক চিকিৎসা এবং বিনামূল্যে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত পৃথিবীর বৃহত্তম জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মূল কেন্দ্র ‘সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল’ কুকুরকে টিকাদান কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে পূর্বের তুলনায় জলাতঙ্ক রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
তিনি আরও জানান, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে দেশের প্রায় ৪ লক্ষ কুকুরকে টিকা দেয়া হবে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী ২ থেকে ৬ জানুয়ারি ভোলা সদর উপজেলার সকল কুকুরকে টিকা দেয়া হব। এ জন্য ভোলা সদর উপজেলায় প্রতিটি টিমে ৫ জন করে মোট ৩৬টি টিম কাজ করবে। পর্যায়ক্রমে ভোলা জেলার সবগুলো উপজেলায় মোট ৩ লাখ ৯০ হাজার কুকুরকে প্রতিবছর একটি করে তিন বছর টিকা দেয়া হবে। আগামী ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর কুকুর টিকাদান কার্যক্রম চলবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার