যুক্তরাজ্য আগামী কয়েক দশকে ১২টি আধুনিক আক্রমণ-ক্ষমতাসম্পন্ন সাবমেরিন নির্মাণ করবে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার প্রকাশিত প্রতিরক্ষা পর্যালোচনায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
নতুন এই সাবমেরিনগুলো হবে পরমাণু-চালিত তবে প্রচলিত অস্ত্রে সজ্জিত। এগুলো ধীরে ধীরে বিদ্যমান অ্যাসটিউট শ্রেণির সাতটি সাবমেরিনের স্থান নেবে। বিদ্যমান সাবমেরিনগুলো ২০৩০-এর দশকের শেষ দিকে অবসরে যাবে।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, এই প্রকল্পে যুক্তরাজ্যের নৌবাহিনী, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে নির্মিত এসএসএন-অকাস (SSN-AUKUS) শ্রেণির সাবমেরিন পাবে। প্রতি ১৮ মাসে একটি করে সাবমেরিন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে বারো-ইন-ফার্নেসের বিএই সিস্টেমস এবং ডার্বির রোলস-রয়েস পারমাণবিক চুল্লি কারখানার সক্ষমতা বড় পরিসরে বৃদ্ধি পাবে।
প্রতিরক্ষা পর্যালোচনায় মোট ৬২টি সুপারিশ রাখা হয়েছে, যা সরকার পুরোপুরি গ্রহণ করবে বলে জানানো হয়। এই ঘোষণার পাশাপাশি সরকার প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়িয়ে ২০২৭ সালের মধ্যে মোট জাতীয় আয়ের ২.৫ শতাংশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আগামী ২০৩৪ সালের মধ্যে তা ৩ শতাংশে পৌঁছানোর লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, ‘রাশিয়ার হুমকি এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। যুদ্ধ প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে তার জন্য প্রস্তুত থাকা।’ পর্যালোচনায় আরও বলা হয়: ৬টি নতুন অস্ত্র কারখানা নির্মাণে ১.৫ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করা হবে। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রসহ ৭,০০০ দীর্ঘ-পাল্লার অস্ত্র তৈরি করা হবে। সাইবার ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ সক্ষমতা বাড়াতে নতুন ‘কম্যান্ড ইউনিট’ গঠন হবে। সেনা সদস্যদের আবাসন মেরামতে বরাদ্দ ১.৫ বিলিয়ন পাউন্ড ও দ্রুত টার্গেট শনাক্তকরণে প্রযুক্তি উন্নয়নে বরাদ্দ ১ বিলিয়ন পাউন্ড বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া ট্রাইডেন্ট ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী ভ্যানগার্ড শ্রেণির পরমাণু সাবমেরিনের বদলে নতুন ‘ড্রেডনট শ্রেণি’ চালুর প্রতিশ্রুতি আবারও পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
বলা হচ্ছে, প্রতিরক্ষা বাজেটের অন্তত ২০ শতাংশ ব্যয় হবে এই পারমাণবিক প্রকল্পে, যার মধ্যে রয়েছে চারটি ড্রেডনট সাবমেরিন নির্মাণ ও যুদ্ধক্ষমতা ধরে রাখার ব্যয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল