প্রস্তাবিত বাজেটে ন্যূনতম করের পরিমাণ এলাকাভেদে বৃদ্ধি করে ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ করবর্ষ থেকে ৫ হাজার এবং নতুন করদাতাদের জন্য ন্যূনতম করের পরিমাণ ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৪৫টি সেবা গ্রহণের পরিবর্তে ক্রেডিট কার্ডসহ ১২টি সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) দাখিলের বিধান করা হয়েছে। ফলে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা কমছে।
গতকাল অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে এসব তথ্য উঠে আসে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে স্বাভাবিক ব্যক্তি ও হিন্দু অবিভক্ত পরিবার করদাতাদের জন্য ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ করবর্ষে মোট আয় করমুক্ত আয়ের সীমা অতিক্রম করলে ন্যূনতম করের পরিমাণ এলাকাভেদে ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন করদাতাদের ন্যূনতম করের পরিমাণ ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ করবর্ষের জন্য স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। গেজেটভুক্ত জুলাই গণ অভ্যুত্থান ২০২৪-এ আহত ‘জুলাই যোদ্ধা’ করদাতাদের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ন্যূনতম করের কারণে কোনো করদাতাকে নিয়মিত করের যে পরিমাণ অতিরিক্ত কর প্রদান করতে হয় তা পরবর্তী করবর্ষে সমন্বয় করার সুযোগ রাখা হয়েছে। কৃষি উৎপাদন উৎসাহিত করার জন্য স্বাভাবিক ব্যক্তির ‘কৃষি হইতে আয়’ অনধিক ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত রাখা হয়েছে। বেসরকারি চাকরিজীবীদের করযোগ্য আয় সাড়ে ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ করা হয়েছে। প্রস্তাবে তিনি বলেন, চাকরিরত কর্মচারীদের কিডনি, লিভার, ক্যানসার, হার্টের চিকিৎসার পাশাপাশি মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার ও কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনসংক্রান্ত চিকিৎসা ব্যয় বাবদ প্রাপ্ত অর্থ করমুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের আয় এবং জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সর্বজনীন পেনশন স্কিম থেকে আয় করমুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া জিরো কুপন ইসলামিক ইনভেস্টমেন্ট সার্টিফিকেট থেকে আয় করমুক্ত করা হয়েছে। বিদ্যমান ৪৫টি সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ উপস্থাপনের বাধ্যবাধকতা শিথিল করে ক্রেডিট কার্ডসহ ১২টি সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে কেবল টিআইএন সার্টিফিকেট দাখিলের বিধান করা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, তহবিল, এতিমখানা, অনাথ আশ্রম ও ধর্মীয় উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত কোনো প্রতিষ্ঠানকে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। উৎসে কর কর্তনকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রতি মাসের পরিবর্তে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে উৎসে করের রিটার্ন দাখিলের বিধান করা হয়েছে।