২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বেশ কয়েকটি ভোগ্যপণ্যের ওপর শুল্ক ও কর রেয়াতের প্রস্তাব করেছেন। প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, চিনি, দুধ, স্যানিটারি ন্যাপকিন, কম্পিউটার মনিটর, বিদেশি মাছ, আইসক্রিম, পোশাক, জুতা, প্লাস্টিক সামগ্রীসহ একাধিক পণ্যের ওপর শুল্ককর কমানো হচ্ছে। বাজেট বক্তৃতা শুরু হওয়ার পর থেকেই এসব প্রস্তাব তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর ধরা হয়, যার ফলে কয়েকটি পণ্যের দাম কমার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পণ্যগুলোর মধ্যে পরিশোধিত চিনির আমদানিতে টনপ্রতি শুল্ক ৫০০ টাকা কমিয়ে ৪ হাজার টাকা করা হয়েছে। এতে স্থানীয় বাজারে চিনির দামে স্বস্তি আসতে পারে।
নারী স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় স্যানিটারি ন্যাপকিন জাতীয় পণ্যে স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। প্যাকেটজাত তরল দুধের ওপর স্থানীয় পর্যায়ে আরোপিত ভ্যাট তুলে নেওয়া হয়েছে, ফলে দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। ছাত্রছাত্রী ও অফিস-আদালতে বহুল ব্যবহৃত সামগ্রী বলপয়েন্ট কলমের ওপর স্থানীয় পর্যায়ের ভ্যাট মওকুফ করা হয়েছে। স্যামন ও টুনাসহ বিদেশি মাছের ওপর সম্পূরক শুল্ক কমানো হয়েছে। একইভাবে বিদেশি মাংসেও শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব এসেছে। বিগত বছরগুলোতে ক্রমাগত শুল্ক বৃদ্ধির পর এবার আইসক্রিমে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহায়ক হিসেবে ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত কম্পিউটার মনিটর ও ইন্টারেকটিভ পর্দার ওপর উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাটার আমদানিতে ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক তুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে আমদানিকৃত বাটারের দাম কমতে পারে। বিদেশি প্লাস্টিকের তৈরি হাউজহোল্ড সামগ্রীর ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। পুরুষ, নারী ও শিশুদের বিদেশি পোশাক এবং জুতা-স্যান্ডেলের ওপর সম্পূরক শুল্ক কিছুটা কমানো হয়েছে। এ ছাড়া ক্যানসারের ওষুধ, ইনসুলিন, দেশি তৈরি ই-বাইক, ভূমি নিবন্ধন ফি, টায়ার, মাটির পাত্র-পেপার প্লেটস-অন্যান্য, উড়োজাহাজ ভাড়া কমতে পারে। অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, এসব শুল্ক ও করছাড় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির ব্যয় কমাতে সহায়ক হবে। তবে বাজারে এসব প্রভাব পড়তে কিছুটা সময় লাগতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।