বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের অর্থনীতি আজ ভেঙে পড়েছে। তাদের কাউকেই আজ জবাবদিহিতা করতে হয় না। দেশে আজ ধানের দাম নেই, অথচ চালের দাম বেড়েছে। বেড়েছে পিয়াজসহ নিত্য-পণ্যের দাম। এতো দাম বেড়েছে কিন্তু আমার কৃষক আজ দাম পায় না। শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পায় না, ধ্বংস হয়ে পড়েছে খুলনা জুটমিল। আমাদের কৃষক, শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষরা যে অন্দকারে ছিল আজও তারা সে অন্ধকারেই রয়ে গেছে।
বুধবার বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভুল্লী কুমাড়পুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, জাতির আজ চরম দুঃসময় চলছে। এতোবড় দুঃসময় ৭১ সালেও ছিল না। ৭১ এ জাতি স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছে বহিঃশত্রুর বিরুদ্ধে। কিন্তু আজকের শত্রু হচ্ছে ঘরের শত্রু। ঘরের মধ্যে থেকেই তারা বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে। মানুষগুলোকে সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে, তাদের কথা বলার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, ভোটের আগের রাতে তিন চারটি রাষ্ট্র যন্ত্রের বাহিনী দিয়ে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, জনগণ যেনো ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারে। ফলে সাধারণ জনগণ ভোট দিতে যেতে পারেনি। কয়টা লোক ভোট দিয়েছে? তাহলে ভোটটা দিল কে, ভূত?
মির্জা ফখরুল বলেন, তারা শুধু মুখেই গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে। আসলে তারা গণতন্ত্রের চর্চাই করে না। আমরা দেশের নানা সমস্যা নিয়ে কথা বললে রাষ্ট্রদ্রোহী বলা হয়। আজ খুনের আসামিদের জামিন দেয়া হয় অথচ খালেদা জিয়ার জামিন তারা দেয় না। তিনি বের হলেই তাদের এসব অন্যায় জনগণের সামনে তুলে ধরবে তাই। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নতুন আঙ্গিকে ছদ্মবেশী বাকশাল কায়েম করেছে। গণতন্ত্রের নূন্যতম যেটুকু বাকি ছিল গত এক বছরে তারা তা শেষ করে দিয়েছে। সংবিধানকে কেটে কেটে তারা তছনছ করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ৩৬ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এক লাখ মামলা ও গুম করেছে ৫০০-র বেশি। তাদের মা, স্ত্রী ও সন্তানেরা আজো পথ চেয়ে থাকে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা তারা কেড়ে নিয়েছে। বিচারকরা আজ তাদের কথায় ওঠে আর বসে। ৭১ এ সাধারণ মানুষেরা যুদ্ধ করেছে কোন ব্যক্তি বা দলকে সারাজীবন ক্ষমতায় বসে থাকার জন্য নয়।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা আলমগীর বলেন, ৫২ ভাষা আন্দোলন ও ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের তরুণ যুব সমাজের ভূমিকা ছিল মুখ্য। আজ তাদের মাধ্যমেই দেশের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে ও খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
বালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত