ভোলায় বাল্য বিয়ে রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী বর্তমানে এই হার দাঁড়িয়েছে ৬০ দশমিক ৩ ভাগে। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ সময় জানানো হয়, জাতীয় পর্যায়ে বাল্য বিয়ের হার যেখানে ৫১ দশমিক ৪ ভাগ সেখানে বরিশাল বিভাগে ৫৫ দশমিক ৬ ভাগ। বাল্য বিয়ের হার না কমার পেছনে আইন প্রয়োগে শিথিলতা, সামাজিক অসচেতনা, দরিদ্রতা, কুসংস্কার, অজ্ঞতা, নিরাপত্তাবোধের অভাবসহ দরিদ্রতাকে দায়ী করা হয়েছে। পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদানকারীকে আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের উপর জোর দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মো: মাহামুদুর রহমান সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক। অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আতাউর রহমান, ইউনিসেফ বরিশাল বিভাগীয় প্রধান এ এইচ তৌফিক আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: মহসিন আল ফারুক, এনজিও কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক ফেরদৌউস আরা রুমী, ইউনিসেফের শিশু সুরক্ষা কর্মকর্তা মো: জামিল হোসেন, কোস্ট ট্রাস্ট আইইসিএম প্রকল্পের পিসি মো: মিজানুর রহমান প্রমুখ।
এ ছাড়া সংলাপে অংশ নিয়েছেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মো: ইকবাল হোসেন, প্রবীন সাংবাদিক আবু তাহের, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো: দেলোয়ার হোসেন, কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক মো: ইকবাল হোসেন, কোস্ট ট্রাস্ট টিম লিডার রাশিদা বেগম, জাহানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: ইউনুছ মিয়া, কোস্ট ট্রাস্টের সিনিয়র সমন্বয়কারী মো: জহিরুল ইসলাম, প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি নেয়ামত উল্ল্যাহ, ইউনিয়ন তথ্য উদ্যোক্তা মো: ইব্রাহীম।
এসময় কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আবিদ হাছান, সানজেদুল ইসলাম, সেতু, রাকিব প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরো বলেন, ভোলা জেলায় প্রায় ৩৬টির মতো চর রয়েছে। এই চরে প্রায় কয়েক লাখ মানুষ বসবাস করে থাকে। পাশাপাশি বেড়িঁবাধ ও নৌকাবাসী (মানত সম্প্রদায়) রয়েছে। এই জায়গায় মেয়েদের বাল্য বিয়ের প্রবনতা বেশি। ফলে ১৫ বছরের নিচে অধিকাংশ কিশোরীর বিয়ে হচ্ছে। বাল্য বিয়ে হওয়ার ফলে মেয়েরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। আবার অনেকের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে বাল্য বিয়ে। মেয়েদের ১৮ ও ছেলেদের ২১ বছর আগে বিয়ে দেয়া যাবে না। অভিভাবক, চেয়ারম্যান, মেম্বার থেকে শুরু করে সমাজের সর্বক্ষেত্রে সকলের আরো সচেতন হতে হবে। কিশোর-কিশোরীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। সকলেই সমান। তাদেরকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ