মাদারীপুরে ধর্ষকের সাথে কিশোরীকে বিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের কুমরাখালি গ্রামের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক কিশোরীকে গত ২ জুন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার ফসলী গ্রামের সোহাগ মুন্সি(২২) নামে এক যুবক অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে মাদারীপুর সদর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় গত ৮ জুন মাদারীপুর সদর থানায় ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার ফসলী গ্রামের সোহাগ মুন্সিকে।
গত ২০ জুন মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ও সবুর মেম্বার, শহিদ মেম্বারসহ স্থানীয়রা বিষয়টি সালিশ মীমাংসা করে দেয়ার জন্য দুই পক্ষকে ডাকে। এসময় শালিসদার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগে অভিযুক্ত সোহাগের সাথে ওই কিশোরীর বিয়ে দেয়ার রায় দেন। একই সাথে সোহাগকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদানের রায়ও দেন। এসময় প্রভাবশালী অর্ধশত লোক উপস্থিত ছিলেন বলেন জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এব্যাপারে কিশোরীর বাবা বলেন, ‘সোহাগের বোনের বাড়ি এখানে। সেই সুবাদের এখানে আসত। সোহাগ আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। পরে পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার করেছে। আমার মেয়ে জানিয়েছে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। সেই সোহাগের হাতেই আমার মেয়েকে তুলে দিয়েছে। আমি গরীব মানুষ। চেয়ারম্যানের পায়ে ধরেছি। তবুও শোনেনি। জোরপূর্বক আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে। আমি আমার মেয়েকে ফেরত চাই।’
এ ব্যাপারে পেয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সবুর মেম্বার বলেন, জোড়পূর্বক নয়। দুই পক্ষের সম্মতিতেই শালিস হয়েছে। মেয়ের বাবাকে ৩০হাজার টাকা দেয়ার কথা ছিলো ছেলে পক্ষের। সেই টাকা না দেয়ার কারণেই হয়তো সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছে মেয়ের বাবা।
পেয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমার বলেন, দুই পক্ষ একত্র হয়ে আমার কাছে আসছিল। পরে আমি বলেছি তোমরা মিলমিশ হয়ে যাও। ধর্ষণ ও অপহরণ সালিশ যোগ্য নয়। তাই আমি তাদের বলেছি মামলা মামলার গতিতে চলবে। আমি কোন সালিশ করিনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই প্রবাস কুমার বসু বলেন, এই ধরনের ঘটনা সালিশ যোগ্য নয়। আমি শুনেছি স্থানীয়রা নাকি এই ঘটনা মীমাংসা করে দিয়েছে। মামলার আসামিকে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এব্যাপারে মাদারীপুর জজ কোর্টর এপিপি এডভোকেট আবুল হাসান সোহেল বলেন, ধর্ষণ ও অপহরণের ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বারদের সালিশ করার এখতিয়ার নাই। এটা তারা করতে পারে না।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন