বাগেরহাটের শরণখোলায় পঞ্চম শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে (১১) ধর্ষণের মামলার রায় আগামী ৫ নভেম্বর ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার বিকেলে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. নূরে আলম রায় ঘোষণার এই দিন নির্ধারণ করেন।
মামলায় বাদী পক্ষে ১৫ জন এবং আসামি পক্ষে দুজন মিলিয়ে মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন বিচারক। ধর্ষণের শিকার মাদ্রাসা ছাত্রী শরণখোলা উপজেলার বাসিন্দা এবং স্থানীয় একটি এবতেদায়ী মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী।
ধর্ষণ মামলায় মাদ্রাসা সুপার ইলিয়াছ জোমাদ্দার (৪৮) একাই আসামি। তিনি বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার উত্তর খোন্তাকাটা রাশিদিয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার সুপার এবং একই উপজেলার পূর্ব রাজাপুর গ্রামের আব্দুল গফফার জোমাদ্দারের ছেলে।
মামলার বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) রনজিৎ কুমার মণ্ডল বলেন, ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট সকাল সাতটায় পঞ্চম শ্রেণির চার ছাত্রী মাদ্রাসায় আরবি শিক্ষা নিতে যায়। পৌনে আটটার দিকে মাদ্রাসার সুপার ইলিয়াছ জোমাদ্দার এক ছাত্রীকে রেখে অন্য তিনজনকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
পরে তিনি ওই ছাত্রীকে মাদ্রাসার লাইব্রেরিতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এই ঘটনা কাউকে না জানাতে হুমকি দিয়ে মেয়েটিকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন মাদ্রাসা সুপার। অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটি মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে বাড়িতে গিয়ে তার মাকে ঘটনা খুলে বলে।
এ ঘটনার ১১ দিন পর ১৯ আগস্ট মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় মাদ্রাসা সুপার ইলিয়াস জোমাদ্দারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। এই মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) তদন্তভার দেওয়া হয়।
এরপর পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু সাইয়েদ তদন্তে নামেন। তিনি তদন্তে নেমে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়ানো মাদ্রাসা সুপার ইলিয়াছ জোমাদ্দারকে ওই বছরের ১৭ অক্টোবর জেলার ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারের পর মাদ্রাসা সুপার ইলিয়াছ ধর্ষণের কথা স্বীকার করে তিনদিন পর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইয়েদ তদন্ত শেষে ধর্ষণের সত্যতা পেয়ে ১৩ নভেম্বর মাদ্রাসা সুপার ইলিয়াছের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই