বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া উত্তর ও দক্ষিণের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত হলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের হামলা-সংঘর্ষ চললেই। সবশেষ শনিবার সন্ধ্যায় উলানিয়া বাজারে শ্রমিক লীগ অফিসে হামলা চালানো হয়। তখন শ্রমিক লীগের ৬ নেতাকর্মীকে কুপিয়ে পিটিয়ে আহত করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। তখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও ভাওচুর করা হয়।
আহতরা হলেন উলানিয়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি গনি বয়াতী, কর্মী আলমগীর হাওলাদার, পলাশ দে, আজিজুল, শামসু ও খোকন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত শ্রমিকলীগ নেতা গনি বয়াতী জানান, প্রতিদিনের মতো গতকাল সন্ধ্যায় শ্রমিক লীগ অফিসে ছিলেন তারা। আকস্মিক উলানিয়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল মোল্লা ও তার ভাই নোমান মোল্লার নেতৃত্বে একদল লোক শ্রমিক লীগ অফিসে হামলা চালায়। তখন তারা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে-কুপিয়ে তাদের ৬ জনকে আহত করেন। হামলাকারীরা অফিসে থাকা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন।
তিনি আরও জানান, নির্বাচন স্থগিত হওয়ার আগে তারা নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী মিঠ‚ চৌধুরীর সমর্থনে বিভিন্ন জায়গায় উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেন। এতে ক্ষুব্ধ ছিলেন নৌকার প্রার্থী জামাল। এ কারণে দলবদ্ধভাবে তারা হামলা চালায়।
তবে চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে। এখন আমাদের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে।
মেহেন্দীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোমিন উদ্দিন জানান, সকালে একটি হাতাহাতির ঘটনা শুনেছি। সন্ধ্যায় শ্রমিক লীগ কার্যালয় ভাঙচুর ও হামলার বিষয়ে পুলিশ কোনো অভিযোগ পায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর সলদি গ্রামে চারজনকে কুপিয়ে-পিটিয়ে গুরুতর জখম এবং তাদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে মালামাল লুট কার হয়। এরপর ৮ ডিসেম্বর দুপুরে দক্ষিণ উলানিয়ার পশ্চিম সুলতানী ও যাদুয়া গ্রামে বিদ্রোহী প্রার্থীর নেতৃত্বে নৌকার সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়। তখন নৌকার সমর্থকদের ১৯টি বসতঘর ও দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর এবং ২০ জনকে কুপিয়ে-পিটিয়ে আহত করা হয়।
গত রবিবার হাইকোর্টের নির্দেশে মেহেন্দিগঞ্জ উলানিয়া উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। এরপর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ