একযুগ পরে ধর্ষণের শিকার প্রতিবন্ধী নারীকে সন্তানের পিতৃপরিচয়ের স্বীকৃতি দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে ধর্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
রংপুরের পীরগাছায় প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষক আবুল কালামকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক রোকনুজ্জামান এ রায় প্রদান করেন।
বিচারক রায়ে প্রতিবন্ধী নারীর গর্ভে জন্ম নেয়া পুত্র সন্তানকে আসামি আবুল কালামের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও তার ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তির অংশ দেয়ার আদেশ দেন। যদি কোন সম্পদ না থাকে তা হলে রাষ্ট্রকে শিশুটির দায়িত্ব গ্রহণের আদেশ দেন বিচারক।
আদালত ও মামল সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার হরিরাম গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে শ্রবন ও বাক প্রতিবন্ধীকে একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে আবুল কালাম ২০০৮ সালের ১ ডিসেম্বর বাসায় একা পেয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি ইশারায় প্রতিবন্ধী নারী স্বজনদের জানায়। এর মধ্যেই প্রতিবন্ধী নারী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এরপর ২০০৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে। এ ঘটনায় পীরগাছা থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণ না করায় প্রতিবন্ধী নারীর বাবা আব্দুর রহমান বাদী হয়ে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করলে আদালত অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করার জন্য পীরগাছা থানাকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীকালে পুলিশ আসামি আবুল কালামের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেলা গ্রহণ শেষে বিচারক আবুল কালামকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন জানান, তারা ন্যায় বিচার পেয়েছেন। সেই সাথে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া শিশুটির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন আদালত এবং সম্পদের অংশ দেয়ারও আদেশ দিয়েছেন এটি একটি যুগান্তকারী রায় বলে জানান তিনি।
আসামী পক্ষের আইনজীবী এমদাদুল হক প্রধান জানান, এ রায়ে তারা ন্যায় বিচার পাননি উচ্চ আদালতে আপীল করবেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
