১৯ জানুয়ারি, ২০২১ ১৭:৩৫

চিরিরবন্দরে ঘরের চাবির অপেক্ষায় ২১৫ গৃহহীন পরিবার

দিনাজপুর প্রতিনিধি

চিরিরবন্দরে ঘরের চাবির অপেক্ষায় ২১৫ গৃহহীন পরিবার

মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার ‘মাথা গোঁজার ঠাঁই’ হিসেবে পাকা বাড়ি পাচ্ছেন দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ২১৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। এসব পরিবারগুলো তাদের স্বপ্নের ঘরের চাবি পাওয়ার আশায় দিন গুণছেন।

চিরিরবন্দরের তেতুঁলিয়া ইউপির বৈকুন্ঠপুর গ্রামের ভূমিহীন খুকিবালা রায় পাটখড়ি ও বাঁশের বেড়া এবং জরাজীর্ণ টিনের চালার বাড়ির সামনে বসে রোদ পোহাচ্ছেন। বিয়ের কয়েক বছর পর তার স্বামী মারা যায়। সন্তানেরা আলাদা থাকায় অন্যের বাড়িতে কাজ করে কুঁড়েঘরে জীবনযাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তিনি পাকা বাড়ি ও জমি পাচ্ছেন। এই কথা বলার সাথে খুশিতে কান্নাভেজা কন্ঠে খুকিবালা রায় বলেন, ‘মুই বাড়ি পায়া খুবই খুশি হইছু বাহে। মুই স্বপনেও ভাবো নাই কোনোদিন ইটের বাড়ি পাইম। প্রধানমন্ত্রীকে আশীর্বাদ করোছো।’

একই ইউপির গোন্দল গ্রামের ৫৮ বছর বয়সী আদিবাসী নারী মাইনো বাসরা বলেন, ‘মুই বুড়া (পুরাতন) টিন আর সিনডার (পাটখড়ি) চাটি (বেড়া) দিয়া ঝুঁপড়ি ঘর করি আছুনু। বাইরোত ভাত আন্দি (রান্না) খাছো। মুই মেলা কষ্ট করি জীবন চালাছো। মাসখানেক আগত ইউএনও মোর বাড়িত আসি ছবি তুলি নিছে আর কয়া গেইছে মোক নাকি শেখের বেটি বাড়ি দ্যাছে। এ্যালা নয়া ঘর তৈরি হইছে। ভগবান শেখের বেটির ভাল করুক।’

তার মতো উপজেলার ২১৫টি দরিদ্র গৃহহীন পরিবার এতে উচ্ছ্বসিত। গৃহহীনদের জন্য ২১৫টি নির্মিত বাড়ির কাজ কোথাও চলছে বা কোনোটা শেষ পর্যায়ে। চারদিকে ইটের দেয়াল এবং মাথার উপরে দেওয়া হচ্ছে লাল ও সবুজ রঙের টিনের ছাউনি।

দুই কক্ষবিশিষ্ট সেমি পাকা ঘর নির্মাণে প্রতিটি ঘর বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য থাকছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর, টয়লেট, কিচেন ও স্টোর রুম।

চিরিরবন্দর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. মনোয়ারুল ইসলাম জানান, উপজেলায় ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় এসব ঘর নির্মিত হচ্ছে। কাজ প্রায় শেষের পথে।

চিরিরবন্দর উপজেলা ইউএনও আয়েশা সিদ্দীকা জানান, ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’-প্রধানমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে সরকারের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পাকা গৃহ নির্মাণের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আগামী ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে একযোগে দেশব্যাপী এসব ঘরগুলো উদ্বোধন করবেন।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর