পাবনায় পরিবেশ বান্ধব ও নিরাপদ মাচা পদ্ধতিতে টমেটো চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এতে সবজি নষ্ট না হওয়ায় বাড়ছে উৎপাদনও। মাচায় বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে কৃষকরা আগের চেয়ে এখন বেশি লাভবান হচ্ছেন। ফলে মাচা পদ্ধতিতে পটল, টমেটো, লাউ, সিম, মিষ্টি কুমড়া, করলা, ধুন্দল, চালকুমড়া, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, শসা ও বরবটিসহ লতা জাতীয় অন্যান্য সবজি চাষ বাড়ছে।
পাবনা চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের মাচা পদ্ধতিতে টমেটো চাষি আবুল হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তিন বন্ধু মিলে ছয় বিঘা জমিতে সবজির খামার করেছেন। খামারে মাচায় টমেটো পটল, লাউ, করলা ও ধুন্দল চাষ করছেন। বাঁশের খুঁটি পুঁতে তার টানিয়ে তার উপর পাটকাঠি, নাইলন সুতা, পাতলা তার বিছিয়ে মাচা তৈরি করেছেন।
সোয়া দুই বিঘা জমিতে মাচায় টমেটো চাষে ইতিমধ্যে তাদের প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বিজলী-১১ জাতের টমেটো চাষ করেছেন তারা। ইতিমধ্যে টমেটো পাকতে শুরু করেছে। টমেটোর বাজার দাম ভাল থাকলে প্রায় এক লাখ টাকা লাভ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি আরো জানান, মাচায় চাষ করলে পচনের হাত থেকে সবজি রক্ষা পায়। ফলে ফলন প্রায় দ্বিগুণ হয়। পোকা মাকরের হাত থেকে সবজি রক্ষা পায়। সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগেও সুবিধা হয় বলে জানান তিনি।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চাটমোহর উপজেলায় ১ হাজার ৮৪৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ২০০ হেক্টর জমিতে শিম, ২৫০ হেক্টর জমিতে বেগুন, ১৯৫ হেক্টর জমিতে মূলা, ১৬০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি, ১৪৫ হেক্টর জমিতে লাউ, ১১৫ হেক্টর জমিতে পালং শাক ও ৯০ হেক্টর জমিতে বাধাকপিসহ অন্যান্য সবজি আবাদ হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুম বিল্লাহ জানান, কৃষকরা এখন সচেতন হয়েছেন। অনেক কৃষক টমেটোসহ লতানো সবজি মাচায় চাষ করতে শুরু করেছেন। মাচায় সবজি চাষে প্রারম্ভিক খরচ বেশি হলেও এটি লাভজনক। পটল, টমেটো, লাউ, সিম, মিষ্টি কুমড়া, করলা ও ধুন্দলসহ লাতানো জাতীয় সবজি মাচায় চাষ করা যায়। এর জন্য উঁচু জমি বেছে নেওয়া ভাল। উঁচু করে মাচা তৈরি করলে মাচার সবজি মাটির সংস্পর্শে আসে না। পোকা মাকড়, ছত্রাকের আক্রমণ কম হয়।
টমেটো ও মিষ্টি কুমড়া জাতীয় ফসল মাটির সংস্পর্শে থাকলে একদিকে যেমন পচনের ভয় থাকে তেমনি অন্য দিকে মাটির পাশটায় ঠিকমতো পাকে না। মাচায় সবজি চাষের অন্য সুবিধাগুলো হলো সবজিতে ভিটামিন বা সীমিত আকারে কীটনাশক প্রয়োগের সময় তা নষ্ট হয় না। গাছের গোড়ার আগাছা পরিষ্কার করা সহজ হয়। পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় এ পদ্ধতিতে নিরাপদ সবজি পাওয়া যায়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই