নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই দুই উপজেলার অর্ধ-শতাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। ছোট যমুনা নদীর দুই তীরের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ বছরের পর বছর শুকনো মৌসুমে সাঁকো ও আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়েই চলাচল করে আসছে। একটি সেতু কিংবা ব্রিজের প্রয়োজন এই অঞ্চলের মানুষের এখন সময়ের দাবি।
জানা যায়, ছোট যমুনা নদী ভাগ করেছে জেলার রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলাকে। এই নদীর পূর্ব পাশে রাণীনগর উপজেলার গোনা, কাশিমপুর ও আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়ন পরিষদ এবং পশ্চিম পাশে কালিকাপুর, হাটকালুপাড়া, বড়বিহানলী ও রাজশাহী জেলার বাগমারা ইউনিয়ন পরিষদ অবস্থিত। এর মাঝখানে রয়েছে ভূপনার ঘাট।
এই ঘাট দিয়ে রাণীনগর উপজেলার কৃষ্ণপুর, মালঞ্চি, ঘোষগ্রাম, ভবানীপুর, মির্জাপুর ও মিরাপুরসহ প্রায় ৪৫টি গ্রাম এবং আত্রাই উপজেলার আটগ্রাম, হরপুর, বাউল্লা, তারানগর, শৈলিয়া, লালুয়া, গোন্ডগোহালীসহ প্রায় ৪৫টি গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দাদের ছোট যমুনা নদী পারাপারে একমাত্র উপায় শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা।
দেশ বর্তমানে ডিজিটাল উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত হলেও একটি সেতু কিংবা ব্রিজের অভাবে এখনো পিছিয়ে রয়েছে এই জনপদের জীবনমান। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। এই অঞ্চলে এখনো যোগাযোগ ব্যবস্থায় আধুনিকতার কোনো ছোঁয়াই স্পর্শ করেনি। যার কারণে প্রতিনিয়ত থমকে যাচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকসহ হাজার হাজার মানুষের অর্থনৈতিক চাকা। প্রতিদিন এই ঘাট দিয়ে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ চলাচল করে। নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ ছাড়াও শতশত শিক্ষার্থীদের এই ঘাট দিয়ে চলাচল করতে হয়।
রাণীনগরের কৃষ্ণপুর, ঘোষগ্রামের শহীদুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন, বাপ-দাদার পাশাপাশি আমাদের ও বর্তমান প্রজন্মের জীবন কেটে গেলো বাঁশের সাঁকো আর নৌকা করে নদী পাড় হয়ে। আমরা জানি না, আগামী প্রজন্মরা কি তাদের জীবদ্দশায় এই ঘাটে একটি সেতু কিংবা ব্রিজ দেখতে পাবে? শুকনো ও বর্ষা এই দুই মৌসুমেই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এই নদী পারাপার। ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে।
আত্রাইয়ের আটগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি শিক্ষক শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রয়াত সাংসদ ইসরাফিল আলমের সময়ে এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছিল একনেক। ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ১০-১২ বার ঘাটে এসে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজও করে গেছেন। কিন্তু আজও আলোর মুখ দেখেনি।
নওগাঁ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মাকসুদুল আলম বলেন, এ বিষয়ে নতুন করে একটি কর্ম-পরিকল্পনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ পরবর্তী নির্দেশনা দিলে কাজ শুরু করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই