৪ আগস্ট, ২০২১ ২০:৫৭

কলাপাড়ায় কৃষকদের কাজে আসছে না ‘জলকপাট’

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি


কলাপাড়ায় কৃষকদের কাজে আসছে না ‘জলকপাট’

কলাপাড়ায় কৃষকদের কাজে আসছে না ‘জলকপাট’।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ‘জলকপাট’ কৃষকদের কোনই কাজে আসছে না। অথচ সমুদ্র উপকূলীয় কৃষি জমি লবণাক্ত পানির কবল থেকে রক্ষা ও বর্ষা মৌসুমে সুষ্ঠুভাবে পানি নিষ্কাশনের জন্য উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণের সময় এগুলো তৈরি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এখন এসব জলকপাট প্রভাবশলীদের দখলে চলে গেছে। তারা আটকিয়ে নিজেদের মতো মাছ শিকার করছেন। ফলে বর্ষা মৌসুমে হাজার হাজার একর কৃষি জমি পানির নিচে তলিয়ে থাকে। আর দেখা দেয় গবাদিপশুর খাদ্যে সংকট। এসবের প্রতিকারের জন্য প্রতিবাদ করলে উল্টো হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে অনেক কৃষকরের নামে। এখন এই জলকপাটগুলো কৃষকদের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ষাটের দশকের প্রথম দিকে এ উপজেলায় ৯টি পোল্ডারে ৩৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। ওই দশকের মাঝামাঝি সময়ে ৪৯টি ড্রেনেজ এবং ৫৩টি ফ্লাশিং জলকপাট নির্মাণ করা হয়। তখন প্রত্যেকটি জলকপাট সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য একজন করে খালাসি নিয়োগ দেওয়া হয়। এলাকার কৃষকদের সুবিধার জন্য তারা পানি ওঠানামা করতো।

প্রয়োজনে গেট বন্ধ রাখতো। আবার প্রয়োজন হলে খুলে দিতো। ৬৯’র পর থেকে নতুন করে খালাসী নিয়োগ বন্ধ করে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে এ এলাকার জলকপাটগুলো অরক্ষিত হয়ে পরে। এ সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দখল করে নেয় জলকপাটগুলো। এমনকি চুরি করে নিয়ে যায় কাঠ, লোহা এবং দরজা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নীচকাটা গ্রামের ৮ ব্যান্ডের জলকপাটটির ওপর ১৭টি গ্রামের মানুষ নির্ভরশীল। বর্তমানে ওই গ্রামগুলোর ৪ হাজার একর জমি চাষাবাদের হুমকির মুখে। চাকামইয়া ইউনিয়নের কাঁঠালপাড়ার ৪ ব্যান্ডের জলকপাট সম্পূর্ণ খোলা রয়েছে। ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই খালের দুপাড়ে রয়েছে চাকামইয়া, কড়ইবাড়িয়া ও আড়পাঙ্গাশিয়া এই তিনটি ইউনিয়নের মানুষের বসবাস। ওইসব গ্রামের দুর্ভোগের সীমা নেই। 

এ ব্যাপারে কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি শওকত হোসেন মেহরাজ জানান, এ উপজেলার সকল জলকপাটের কমিটির প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদস্য সচিব পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদের সাথে স্থানীয় কৃষক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ৯ সদস্য বিশিষ্ট জলকপাটের নিয়ন্ত্রণ কমিটি রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহম্মদ শহিদুল হক বলেন, সরকারি খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ উপজেলা প্রশাসনের রুটিন ওয়ার্ক। ইতিমধ্যে ধানখালী ইউনিয়নের খাল থেকে ১৬টি অবৈধ বাঁধ কেটে দিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন করা হয়েছে। উপজেলার অন্য ইউনিয়নের খালগুলো থেকে সকল অবৈধ বাঁধ অপসারণ করে সরকারি খাল দখলমুক্ত করা হবে। তবে জলকপাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে। যদি পানি উন্নয়ন বোর্ড উপজেলা প্রশাসনের সহায়তা চায় তাদের সহায়তা করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর