চাঁদপুরে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। পুলিশ ঘটনার ৩ দিন পর অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার করেছে।
চাঁদপুর থেকে ঢাকায় নিয়ে পতিতালয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া মানব পাচারকারী সদস্যদের আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো সদর উপজেলার রঘুনাথপুর আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকার মৃত কাদির মাঝীর মেয়ে সোহাগী বেগম (২৬), তার বড় বোন হীরা বেগম (৩৫) ও সোহাগীর স্বামী একই এলাকার আনোয়ার হোসেন (৩২)। এদের মধ্যে হিরা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলার আসামী না হওয়ায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী মঙ্গলবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশি পাহাড়ায় চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
রঘুনাথপুর আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকার মৃত চান মিয়া হাওলাদারের স্ত্রী বিধবা বিউটি বেগম জানায়, গত শনিবার সকালে তার ১৪বছর বয়সী মেয়েকে তিনি পারিবারিক বিষয় নিয়ে শাসন করেন। এতে তার মেয়ে মায়ের সাথে অভিমান করে। তার এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একই এলাকার মৃত কাদির মাঝির মেয়ে সোহাগী বেগম ও তার স্বামী আনোয়ার হোসেন তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে, লঞ্চে করে ঢাকায় নিয়ে কয়েকজন লোক ধর্ষণ করেন। তাকে লঞ্চযোগে ঢাকায় নেওয়ার পথে একই এলাকার আলী হোসেন নামে এক যুবক তাদেরকে লঞ্চে দেখতে পান। পরবর্তীতে বিষয়টি আলী হোসেন ওই কিশোরীর পরিবারকে জানালে তারা সোহাগী বেগমকে মেয়ের খোঁজের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু সোহাগী বেগম বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করায় ভুক্তভোগী বিউটি বেগম গত সোমবার চাঁদপুর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারই ভিত্তিতে থানার এস আই ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে আসামীদেরকে আটক করেন।
কিশোরী জানায়, আটককৃত আসামি সোহাগী বেগম তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে যান। তারপর সেখানে আসামী আনোয়ার হোসেন তাকে একটি প্রাইভেটকারে ধর্ষন করার পর তাদের চক্রের অন্য ৫ জন সদস্যদের হাতে তুলে দেন। আর ওই পাঁচজন সদস্য তাকে নির্জনে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন বলে কিশোরীর জানান।
কিশোরীর মা বিউটি বেগম বাদী হয়ে বুধবার আটককৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। আটককৃত আনোয়ার হোসেন ও সোহাগী বেগমকে বুধবার বিকেলে চাঁদপুর মডেল থানা থেকে আদালতে হাজির করার পর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এস আই রাশেদুজ্জামান বলেন, ভিকটিমের মা সোমবার তার মেয়েকে অপহরণ করেছে বলে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কিশোরীকে উদ্ধার করে আসামীদের আটক করেছি। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করার পর বুধবার বিকেলে তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করেছি। বর্তমানে কিশোরী পুলিশি পাহারায় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।
চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কান্তি বড়ুয়া জানান, ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত ২ জনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ভিকটিম পুলিশ হেফাজতে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার