বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় হঠাৎ করে সিঁদ কাটা চোরের উপদ্রব বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে উপজেলার আমরুল ইউনিয়নে বড়নগর মধ্যপাড়া, যাদবপুর, রামপুর,আমরুল পাড়া গ্রামে রাতের আঁধারে সিঁদ কেটে চুরির ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত ৪ গ্রামের প্রায় ১৬টি বাড়িতে সিঁদ কাটার ঘটনা ঘটেছে। সিঁদ কেটে চোরেরা গৃহস্থালীর মালামাল নিয়ে চম্পট দিয়েছে। আমরুলে ধারাবাহিক ভাবে সিঁদ কেটে রাখা ও চুরির ঘটনা সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা দেখা যায়।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে জেলার শাজহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়ন বড়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত তছলিম উদ্দিন পুটু ছেলে শামীম হোসেন ও মৃত অয়েজ উদ্দিন ছেলে সুজন এর বাড়িতে সিঁদ কেটে টাকা পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিস চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। এক রাতে দুই বাড়িতে চুরির ঘটনায় এলাকার গৃহবাসিদের মধ্যে চুরি আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
বড়নগর মধ্যপাড়া গ্রামের শামীম হোসেন স্ত্রী মারুফা আকতার জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘুমে যাই চোরেরা রাতে সিঁদ কেটে ঘরের বাক্সের ভিতরের ব্যাগে থাকা লেখাপড়া সকল সনদ, ভোটার আইডি কার্ড, সোনার গহনা, পুরাতন ধাতব মুদ্রা ও ৩০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সঙ্গে টাকা পয়সা ও গহনা একত্রে বাক্সের ভিতর তালা দিয়ে রাখাছিল।
বড়নগর মধ্যপাড়া গ্রামে অপরজন সুজন জানান, ঘরের সিঁদ কেটে চোরেরা জমি দলিল কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ চুরি করে নিয়ে বাশঁঝাড়ে ফেলে গেছে। তিনি আরও জানান,আমি রাত ২টা পর্যন্ত মোবাইল অনলাইনে ছিলাম তারপর ঘুমে যায়।রাত ২ টার পর এ চুরি হতে পারে। তারা কিছু ঘরের প্রয়য়োজনীয় মালামাল নিয়েছে।
এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর রাতে আমরুলের রামপুর গ্রামে ৪টি বাড়িতে সিঁদকেটে ঘরে প্রবেশ করে চোরেরা মালামাল নিয়ে যায়। ৫ সেপ্টেম্বর রবিবার রাতে আমরুল যাদবপুর গ্রামে ২টি বাড়িতে চুরি হয়েছে। আর ১টি বাড়িতে সিঁদ কেটে চুরি না করে রেখে চলে গেছে। এছাড়া গত ৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে আমরুল নগর রামপুর পূর্বপাড়া দবির, আব্দুর, লিটন ও শহিদুলের বাড়ি থেকে সিঁদ কেটে অর্ধ লক্ষধিক টাকাসহ কাপড় ও আসবাবপত্র চুরির অভিযোগ করেন।
শাজহানপুর উপজেলার রামপুর গ্রামবাসীরা জানান, সোমবার রাতে রামপুর গ্রামের আব্দুল হান্নানের দেড় ভরি স্বর্ণ আর মুকুল হোসেন বাড়ি ঢুকে শার্টের পকেটে থাকা মাত্র ২০ টাকা নিয়েছে। একই রাতে মাহমুদুল হাসান মিন্টু ও আব্দুল মজিদ বাড়িতে ৩ জায়গায় সিঁদ কেটে মালামাল নিতে পারেনি।
চুরির শিকার রামপুর পূবপাড়া গ্রাামের আব্দুল হান্নান জানান, সে রাতে ১০টার দিকে ঘুমিয়ে যায়। সকালে উঠে দেখেন ঘরের সিঁদ কেটে ঘরে থাকা দেড় ভরি সোনা গহনা চুরি নিয়ে গেছে।
যাদবপুর গ্রামের ইলিয়াস সানি দাবি করেন ওই রাতে ঘরে থাকা তার স্ত্রীর ২ ভরি সোনাসহ ১৫ হাজার ১শ টাকা চুরি করে নিয়েগেছে সিঁদেল চোরেরা। তবে চোরের কোন হদিস পাওয়া যায়নি।
একই গ্রামের সিঁধেল চুরির শিকার মন্টু মিয়া দাবি করেন তারও গরু বিক্রি করে রাখা নগদ ৫০ হাজার টাকাসহ অন্যান্য মালামালও নিয়ে গেছে চোরেরা।
স্থানীয় শিক্ষক আব্দুল কাদের জানান, কোন একটি সংঘবদ্ধ চক্র এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এ সিঁদ কাটার ঘটনা ঘটাতে পারে।
চুরির বিষয়ে আমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আটল জানান, আমাদের এলাকায় পূর্বে চুরির ঘটনা ছিল, হঠাৎ করে এক সপ্তাহ ধরে সিঁদ কেটে চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। থানা পুলিশ বিষয়টি তৎপর দৃষ্টিতে দেখছেন। পাশাপাশি গ্রাম পুলিশদের সহোযোগিতায় রাতে টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বগুড়ার শাজাহানপুর থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সিঁদ কেটে ঘরে প্রবেশ সংঘবদ্ধ দলকে ধরতে থানা পুলিশ কাজ করছে। এছাড়া গৃহকর্তাদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন