কুষ্টিয়ায় একসাথে ৫ সন্তানের জন্মের ২৪ ঘণ্টা পর তিন সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে পাঁচ নবজাতকের মধ্যে একমাত্র পুত্র সন্তানের মৃত্যু হয়। পরে দুপুর আড়াইটা এবং বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে দুই কন্যা সন্তান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
বাকি দুই কন্যা সন্তানের অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। মারা যাওয়া তিনটি শিশুর ওজন অনেক কম ছিল বলে জানান তারা।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে প্রথমবারের মতো নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে একসাথে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন গৃহবধূ সাদিয়া খাতুন (২৪)। পাঁচ শিশুর মধ্যে একটি ছেলে সন্তান বাকি চারজন কন্যা সন্তান।
কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আশরাফুল আলম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাঁচজনের মধ্যে তিন নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল সূত্র জানা গেছে, গর্ভধারণের পাঁচ মাসের মাথায় সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল। বাচ্চাদের ওজন ৪৩০ গ্রাম থেকে ৬৫০ গ্রামের মধ্যে। গৃহবধূ সাদিয়া খাতুন কুষ্টিয়ার কুমাররখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি গ্রামের কলেজপাড়া এলাকার চা বিক্রেতা সোহেল রানার স্ত্রী। সোহেল রানা একই এলাকার সামাদ আলীর ছেলে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন জানান, শিশুগুলোর ওজন কম হওয়ায় চিকিৎসকরা তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা আর্থিক সমস্যার কারণে শিশুদের ঢাকায় নিয়ে যেতে ব্যর্থ হন। জন্মের পর থেকে শিশুগুলোকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে শিশু ওয়ার্ডে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ নবজাতকের মধ্যে তিনজনকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। বাকি দুই জনের অবস্থায়ও সংকটাপন্ন। দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা না গেলে তাদেরও প্রাণ সংশয় রয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে, সদ্য জন্ম গ্রহণ করা পাঁচ সন্তানের বাবা সোহেল রানা জানান, সন্তান জন্মের পরপরই চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার মত একজন সামান্য চায়ের দোকানির পক্ষে এত ব্যয়বহুল চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। এমন অবস্থায় তিনি বাকি সন্তানদের জীবন বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই