এবার জেন-জি বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে লাতিন আমেরিকার দেশ পেরু। দেশটির রাজধানী লিমায় স্থানীয় সময় শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সরকারবিরোধী শত শত বিক্ষোভকারীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশও টিয়ার গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, পেরুতে বেড়ে চলা সামাজিক অস্থিরতা, সংগঠিত অপরাধ, সরকারি দুর্নীতি এবং সাম্প্রতিক পেনশন সংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
গ্লাডিস নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, আজকের দিনে আগের তুলনায় গণতন্ত্র কমে গেছে। ভয় আর চাঁদাবাজির কারণে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।
কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেও প্রায় ৫০০ মানুষ লিমার কেন্দ্রে জড়ো হয়েছিল। সেলেন আমাসিফুয়েন নামের আরও এক বিক্ষোভকারী বলেন, কংগ্রেসের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই, তাদের প্রতি জনগণের কোনো বিশ্বাসও নেই... তারা দেশটাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে।
বিক্ষোভকারীরা লিমায় প্রেসিডেন্ট ভবন এবং কংগ্রেস ভবনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় রেডিও স্টেশন এক্সিতোসা জানিয়েছে, তাদের এক প্রতিবেদক এবং এক ক্যামেরাম্যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্যালেটের আঘাতে আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অন্তত তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
দেশটির প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। আগামী বছর তার মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু এরই মধ্যে দেশে চাঁদাবাজি ও সংগঠিত অপরাধের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় জনঅসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা গেছে, সরকার ও রক্ষণশীলদের সংখ্যাগরিষ্ঠ কংগ্রেস উভয়কেই অনেক নাগরিক দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখছেন।
চলতি সপ্তাহে সংসদ একটি আইন পাস করেছে, যার মাধ্যমে যুবকরা একটি বেসরকারি পেনশন ফান্ডে যোগদানের জন্য বাধ্য হবেন, যদিও অনেক তরুণ অনিশ্চিত কর্মপরিস্থিতির মুখোমুখি।
উল্লেখ্য, নেপালে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে জেন–জিদের বিক্ষোভে সরকারের পতন ঘটে। চলতি মাসের প্রথম দিকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে ৭২ জন নিহত হন। এটিকে গত কয়েক দশকের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিক্ষোভের ঘটনা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সূত্র: আরব নিউজ