শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলন ও অনশনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্যকোটা বা প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রবিবার প্রথম প্রহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ২১ সেপ্টেম্বর জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার রাত থেকে শহীদ জোহা চত্বরে পোষ্যকোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আশাদুল ইসলাম। পরে তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অনশনে যোগ দেন সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারসহ অন্য শিক্ষার্থীরা। শনিবার সকালে উপাচার্য, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টারা অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়। দুপুরের পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনজন শিক্ষার্থী, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
ঘটনার একপর্যায়ে উপ-উপাচার্য ড. মাঈন উদ্দিন প্রশাসন ভবন থেকে বাসভবনে ফেরার পথে আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে পড়েন। তার গাড়ি আটকে দেওয়া হয় এবং পোষ্যকোটা বাতিলের দাবি জানানো হয়। তিনি পায়ে হেঁটে বাসভবনে যেতে চাইলে আন্দোলনকারীরা বাসভবনের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরবর্তীতে তিনি জুবেরী ভবনে আশ্রয় নিতে চাইলে সেখানেও বাধা দেওয়া হয়। এ সময় উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে শিবির, ছাত্রদল, বাম দল ও সমমনা সংগঠনগুলো। নারী শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। রাত ১টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলন চলে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ঘোষণা দেওয়ার পর আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শিক্ষক লাঞ্ছনার অভিযোগ তোলেন শিক্ষকরা। এর প্রতিবাদে তারা ২১ সেপ্টেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ঘোষণা করেন এবং দাবি আদায় না হলে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দেন।
বিডি প্রতিদিন/আশিক