ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে বসুন্ধরা শুভ সংঘের উদ্যোগে ৬০ জন অসহায় ও হতদরিদ্র নারীর মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার জগন্নাথপুর আধুনিক অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে এই বিতরণ হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ময়নাল হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, একটা সংসার স্বাবলম্বী হতে হলে প্রয়োজন কর্মের। বসুন্ধরা আপনাদের তিন মাসব্যাপী সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে এবং আজ আপনাদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হলো। ইচ্ছা ও কর্মের মাধ্যমে এই মেশিন ব্যবহার করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে অসহায় মানুষদের সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ, মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বৃত্তি, অসুস্থদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ বিতরণ, এতিমখানায় খাবারের ব্যবস্থা, দুর্গম এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনসহ নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে সহায়তা করে যাচ্ছে। তিনি সবার কাছে বসুন্ধরার জন্য দোয়া কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাবেয়া জাহান ইভা। তিনি বলেন, এটি একটি উৎকৃষ্ট উদ্যোগ। দেশের নারী সমাজকে এগিয়ে নিতে বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। বসুন্ধরা গ্রুপ অসহায় নারীদের সাহায্য করছে, যাতে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। অন্যান্য শিল্পপতিরাও যদি এভাবে এগিয়ে আসতেন তবে দেশ আরও দ্রুত অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যেতো।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বসুন্ধরা শুভ সংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক চাঁন মিয়া সরকার। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ডিজিএম মাইমুন কবির, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. দুধ মিয়া, ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক মো. মোশাররফ হোসেন, সিনিয়র অফিসার আমির হোসেন আনোয়ার, মো. জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
সেলাই মেশিন হাতে পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন উপকারভোগীরা। উপজেলার দরিয়াদৌলত গ্রামের বিধবা সুমি আক্তার বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। এখন এই মেশিন দিয়ে ঘরে বসে আয় করতে পারব।
স্থানীয় উলুকান্দি গ্রামের ববিতা রাণী শীল বলেন, আমার স্বামী একজন নরসুন্দর। তার একার উপার্জনে ছয় সদস্যের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। মেশিন পেয়ে এখন আমিও আয় করতে পারব, যা সংসারের খরচ যোগাতে সাহায্য করবে।
স্কুলশিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার জানান, বাবার আয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয়। পড়াশোনার খরচ বহন করা সম্ভব হয় না। এখন মেশিন দিয়ে কাপড় সেলাই করে পড়াশোনার খরচ চালাতে পারব।
অনুষ্ঠানে বক্তারা উপকারভোগীদের সেলাই মেশিন যথাযথভাবে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল