নরসিংদীতে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করেছে স্বামী। সোমবার শহরের ঘোড়াদিয়ার সংঙ্গীতা এলাকায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্বামী ফখরুল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে মেয়ে ও নাতিকে হত্যার খবরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে নিহতের স্বজনরা। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে এখানকার পরিবেশ।
নিহতরা হলো রেশমী আক্তার (২৬) ও তার দেড় বছরের শিশু সন্তান ফাহিম মাহমুদ সালমান সাফায়াত। নিহত রেশমী পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকার পারভেজ মিয়ার মেয়ে। গ্রেফতারকৃত ফখরুল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। সে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে যোগ দিয়েছিল। এ ঘটনায় বিকেলে নিহত রেশমীর পিতা পারভেজ মিয়া বাদী হয়ে ফখরুল ইসলামকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, পারিবারিকভাবে পৌর শহরের দত্তপাড়া এলাকার পারভেজ মিয়ার মেয়ে রেশমীর সাথে ঘোড়াদিয়া সঙ্গীতা এলাকার মো. সাইফুল্লার ছেলে ফখরুলের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ীর লোকজন রেশমীর উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালাতো। ফখরুলের কোন চাকরি না থাকায় প্রায় সময় রেশমীর নিকট টাকা পয়সা চাইতো, টাকা না দিলে রেশমীকে মারধর করতো। এরই মধ্যে তাদের ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সবশেষ সোমবার রাত ২টার দিকে রেশমী ও তার শিশুকে গলাকেটে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ফখরুলের বাবা সাইফুল্লাহ বলেন, রবিবার রাত ১২টায় ফখরুল বাহির থেকে বাসায় আসে। পরে রাত ২টায় ফখরুলের বাচ্চার কান্নার শব্দ শোনতে পাই। কিছুক্ষন পরে আমরা রুমে গিয়ে রেশমি ও তার ছেলে সালমানকে বিছানায় গলাকাটা অবস্থায় দেখতে পাই। আমাদের উপস্থিত টের পেয়ে ফখরুল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে তার বড় ভাই শরীফ ধাওয়া দিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় ব্রাহ্মন্দী এলাকা থেকে তাকে ধরে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে।
নিহতের বাবা পারভেজ মিয়া বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েটাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। আমরা কষ্ট পাবো ভেবে আমার মেয়ে আমাদেরকে কিছুই বলতোনা। তিনি আরো জানায়, ফখরুল মাদকাসক্ত ছিল। কিন্তু আমরা জানতাম না। এসব তথ্য আমাদের কাছ থেকে গোপন রেখে বিয়ে দিয়েছিল। আমি আমার মেয়ে ও নাতি হত্যার বিচার চাই।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, ফখরুল ধারালো চাকু দিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। পারিবারিক কলহের কারণেই এই হত্যাকান্ড ঘটায়। স্ত্রীকে হত্যার সময় ছেলে কান্নাকাটি করার কারণে তাকেও হত্যা করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে হত্যার সাথে ফখরুল একাই জড়িত না অন্য কেই সাথে আছে তা খোঁজে বের করার চেষ্ঠা করছি।
বিডি প্রতিদিন/এএ