২৫ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:৪২

শ্বশুরবাড়ি থেকে জামাইয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

বরগুনা প্রতিনিধি

শ্বশুরবাড়ি থেকে জামাইয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

বরগুনার তালতলীতে শ্বশুরবাড়ি থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ইব্রাহিম (২২) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার ছোটভাইজোড়া এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আজ সকালে বরগুনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা করেছেন নিহতের বাবা।

ইব্রাহীমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের মৌরভীর এলাকার বাদশা খলিফার ছেলে ইব্রাহিমের (২২) সাথে একই উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের ছোটভাইজোড়া এলাকার মো. দেলোয়ার হাওলাদারের মেয়ে লামিয়ার (১৯) বিয়ে হয়। এরপর তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। চার মাস আগে একটি সন্তান হলে গৃহবধূ লামিয়া আক্তার বাপের বাড়ি চলে যান। সেই সময়ে স্ত্রীকে আনতে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে মারধরের শিকার হয়ে ফেরত আসেন ইব্রাহিম। 

পরে নোয়াখালীতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে চলে যায়। নোয়াখালী থেকে চার মাস পরে স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ হলে স্ত্রী জানান তালতলী সদরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকলে তিনি স্বামীর সাথে যাবেন। অন্যথায় তিনি স্বামীর কাছে ফিরে যাবেন না। এরপর স্বামী ইব্রাহিম স্ত্রীর কথামতো তালতলী সদরে বাসা ভাড়া নিয়ে স্ত্রীকে আনতে শ্বশুরবাড়িতে যান। পরে বিষয়টি নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সাথে ইব্রাহিমের কথা কাটাকাটি হয় এবং তাকে শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করা হয়। 

এরপর রাত দেড় টার দিকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

ইব্রাহিমের শ্বশুর মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, সোমবার সারাদিন আমার বাড়ি কাজ করেছে ইব্রাহিম। সন্ধ্যার দিকে আমি প্রজেক্টের ডিউটি শেষে বাড়িতে এলে ইব্রাহিমকে বাড়িতে দেখতে পাই। রাতে আমার মেয়ে চিৎকার করে ডাকতে থাকে গিয়ে দেখি আমার পেছনের একটি ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। 

ইব্রাহিমের বাবা বাদশা খলিফা বলেন, আমার ছেলে আত্মহত্যা করেনি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে গত ৪ মাস আগে আমার ছেলে তার স্ত্রীকে আনতে গেলে ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়েছে তার শ্বশুর। পরে অভিমানে ছেলে নোয়াখালী চলে যায়। আমার ছেলের লাশ যখন উদ্ধার করেছে তখন তার পায়ে জুতো এবং মাটিতে দাঁড়ানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। আমার মনে হয় এটা হত্যা। আমি এ হত্যার বিচার চাই। 

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে বরগুনা সদর হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পরে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর