বগুড়া সারিয়াকান্দির যমুনা নদীতে নিখোঁজ দুই ভাই-বোনের লাশ উদ্ধার করেছে রাজশাহী ডুবুরিদল। বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় প্রথমে বড় বোন নিরা আক্তার (১১) ও বেলা সাড়ে ১০টায় ছোট ভাই জিসান মিয়ার (৭) লাশ উদ্ধার করে।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে সারিয়াকান্দি উপজেলার পৌর এলাকার চরবাটিয়া গ্রামের মশিদুল সরকারের কন্যা নিরা ও পুত্র জিসান বাড়ির পাশের যমুনা নদীতে গোসল করতে যায়। এসময় তাদের সাথে এলাকার অন্যান্য শিশুরাও গোসলে নামে। গোসল করার সময় বেশি পানিতে তলিয়ে যেতে থাকা জিসানকে উদ্ধার করতে যায় বোন নিরা। অন্যান্য শিশুদের সহযোগিতায় জিসানকে উদ্ধার করতে গিয়ে বোনও তলিয়ে যেতে থাকে। অন্যান্য শিশুরা চেষ্টা করলেও ভাইবোন যমুনা নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। এনিয়ে অপর শিশুরা চিৎকার করলে নদী পাড়ের লোকজন ছুটে আসে। নদীতে খোঁজ করেও তাদের না পেয়ে সারিয়াকান্দি ফায়ার সার্ভিসে সংবাদ দেয়।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি ফায়ার সার্ভিসের লিডার ময়েজ উদ্দীন বলেন, মঙ্গলবার বিকাল ৩ টায় সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এরপর যমুনায় নিখোঁজ শিশুদের খুঁজতে ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী ডুবুরিদলকে কল করি। তারা বুধবার সকালে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। এরপর তাদের চেষ্টায় সকাল সাড়ে ৭ টায় মেয়েকে এবং সাড়ে ১০ টায় ছেলেকে মৃত অবস্থায় যমুনা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়।
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, যমুনায় নিখোঁজ শিশুদের উদ্ধারে সারিয়াকান্দি থানা পুলিশ ডুবুরিদলকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছে। বুধবার বেলা ১১টার পর তাদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
দুই সন্তানকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে থাকা মশিদুল সরকার জানান, সারিয়াকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল নিরা। আর জিসান স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়তো। তারা দুইজনই সাঁতার জানতো। নিরা আক্তার গ্রাম থেকে খেয়া নৌকাযোগে যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে উপজেলা সদরের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়তে যেত। আবার স্কুল শেষে নৌকা করেই বাড়ি ফিরতো। পরিবারে এখন স্ত্রী নাজমা বেগম ও বড় ছেলে নিরব মিয়া রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম