নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ৭নং বাটইয়া ইউনিয়ন পরিষদের রিলিফের ৪০ বস্তা চাল গায়েবের ঘটনায় কবিরহাট থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রাম পুলিশ মো. হারুনকে আটক করে বুধবার বিকালে আদালতে পাঠিয়েছে। ইউপি সচিব আব্দুল কাইয়ুম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
এদিকে গ্রাম পুলিশ মো. হারুনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে গ্রাম পুলিশ হারুন অভিযোগ করে বলেন,আমি এ ঘটনার জন্য দায়ী নয়, ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন শাহীন এ ঘটনায় জড়িত। আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমার তিনটি সন্তান রয়েছে, আমি ৪২০ বস্তা চাল এনে ইউনিয়ন পরিষদে জমা দিয়েছি এবং চেয়ারম্যানকে ডিউ বুঝিয়ে দিয়েছি অথচ আমাকে এখন ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি, আমি এর বিচার চাই।
এর আগে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে মঙ্গলবার সকালে চাউল গণনাকালে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদে রিলিফের ৪২০ বস্তা চাল থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ৩৮০ বস্তা। সকালে এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের পাহারাদার গ্রাম পুলিশ মো. হারুনকে অভিযুক্ত করেন ইউপি চেয়ারম্যান ও পরে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
কবিরহাট ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে গ্রাম পুলিশ হারুনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ইউপি সচিব কাইয়ুম সত্যতা স্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যান নতুন মানুষ তেমন কিছু বুঝে না, এটা গ্রাম পুলিশ হারুন ঘটিয়েছে।
বাটিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন শাহীনের যোগসাজশে তার লোকজন পাহারাদারকে দিয়ে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের চাল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সরিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে এবং বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রাম পুলিশকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে। ৭নং বাটইয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন শাহীন ৪০ বস্তা চাউল গায়েবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলেও তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে জানান।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। কেউ অভিযোগ দেয়নি। আটকের বিষয়েও তিনি অস্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতিকুল মামুন বলেন, এ ঘটনায় ইউনিয়নের সচিব আব্দুল কাইয়ুম বাদী হয়ে গ্রাম পুলিশ হারুনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেছে। এ ঘটনা আরও তদন্ত করা হবে, অন্য কেউ জড়িত থাকলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর