নোয়াখালীর বৃহত্তর বাণিজ্য কেন্দ্র চৌমুহনীতে বার বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাড়ছে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ। সরু গলী, অবৈধ ফুটপাত ও জলাশয় ভরাট করে ভবন নির্মাণসহ অপরিকল্পিত নগরায়নকে দুষছেন ব্যবসায়ী ও ফায়ার সার্ভিস। এখনই উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে সংকট আরো প্রকট হওয়ার শংকা। আগুনে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্তও ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতার ভিড়ে সরগরম ছিল চৌমুহনীর ব্যাংক গলীর মার্কেট। দু'বছর করোনার থাবায় সর্বশান্ত ব্যবসায়ীদের মুখেও ছিল উচ্ছ্বাস। কিন্তু বিধি বাম। হঠাৎ বিদ্যুতের শর্টসার্কিটের আগুনে মুহূর্তের মধ্যেই আগুনে পুড়ে যায় দুই শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৫ ঘণ্টা দমকল বাহিনীর ৯টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে রাত সাড়ে ১২টায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে আগুন। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ গলীতে প্রায় প্রতি বছরই ঈদের আগ মুহূর্তে আগুনের ঘটনা ঘটে। বাজারের ভেতরে দমকল বাহিনী থাকলেও সরু পথ, অবৈধ ফুটপাত থাকায় নির্দিষ্ট সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারে না তারা। আবার পানি সংকট রয়েছে চরমে। ফলে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে।
কাপড়, জুতা, প্লাস্টিক সামগ্রী, লাইব্রেরি, ফার্মেসীসহ এখানে রয়েছে প্রায় সব ধরনের পন্যের প্রতিষ্ঠান। চৌমুহনী দেশের বাণিজ্যিক হাব হওয়ায় বৃহত্তর নোয়াখালীর গ্রাম-গঞ্জের ব্যবসায়ীদের পাইকারীর বড় মোকাম এটি। পুরো বাজারে ব্যাংকসহ অর্ধ লাখেরও বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিগত সময়ের চেয়ে এবারের আগুণের তীব্রতা শংকিত করেছে চৌমুহনীর ব্যবসায়ীদের।
আইন অমান্য করা, অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং জলাশয়গুলো ভরাট করায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে ব্যবসায়ী ও উৎসুক মানুষের অসহযোগীতাও আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পাওয়ার অন্যতম কারণ। নোয়াখালী দমকল বাহিনীর উপ-সহকারী পরিচালক অতীশ চাকমা বলেছেন, পুকুর বা জলাশয় ভরাট আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও পরিকল্পিত নগরায়নই পারে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি কমাতে।
এ বিষয়ে জেলা ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক জসিম উদ্দিন জানান, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্ত ছাড়া ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করতে চাননি তিনি।
জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম জানান, উৎসুক জনতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রনে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তারপরও সবার সম্মিলিত চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিসের ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল