ঈদের তিন দিনে নওগাঁর বিশ্ব ঐতিহ্য দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে (সোমপুর বিহার) টিকিট বিক্রি থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ১২ লাখ টাকা। আর লক্ষাধিক পর্যটকরা ভ্রমণ করেছে এই পাহাড়পুর।
মহামারি করোনাভাইরাসের সংকট কেটে প্রায় দীর্ঘ দুই বছর পর আবারও নতুন করে পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার প্রাঙ্গণ। এছাড়া ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে চালু হওয়া টুরিস্ট বাস ভ্রমণ বিলাস নওগাঁর ঐতিহাসিক স্থানগুলো ভ্রমণের ক্ষেত্রে পর্যটকদের মাঝে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
জানা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড়বিহার এই পাহাড়পুর। এর আদি নাম সোমপুর বিহার। নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নে অবস্থিত এটি। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। এটি মূলত পাল রাজত্বের রাজধানী ও সেই সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এখানে সে সময় ভিক্ষুরা পড়ালেখা করত। নওগাঁ শহর থেকে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব প্রায় ৩৪ কিলোমিটার।
এখানে সারা বছর দেশ ও বিদেশ থেকে আগত দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে। তবে দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ঘরে বন্দি থাকায় এই ঈদে খোলা পেয়ে লক্ষাধিক দর্শনার্থীরা পাহাড়পুরে আসছেন। বিগত সময়ের তুলনায় এই ঈদে দর্শনার্থীদের আগমন রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। আগের চেয়ে অনেক আধুনিকায়ন হওয়ায় পাহাড়পুরের পরিবেশ নিয়েও সন্তোষ দর্শনার্থীরা। শনিবার সরকারি ছুটির দিন পর্যন্ত দর্শনার্থীদের আগমন বেশি হয়েছে।
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের কাস্টোডিয়ান ফজলুল করিম আরজু বলেন, পাহাড়পুরের ইতিহাসে এত রেকর্ড পরিমাণ দর্শক কখনও হয়নি। আমরা সীমিত লোকজন নিয়ে আগত দর্শনার্থীদের মানসম্মত সেবা প্রদানের চেষ্টা করছি। এতো দর্শনার্থী সামাল দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেকেই আবার বিহারের প্রাচীর টপকে ভিতরে প্রবেশ করছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আতাউর রহমান বলেন, দেশের ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোকে আরও আধুনিকায়ন করতে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দ্রুত পাহাড়পুরের জনবল সংকটসহ নানা সমস্যা সমাধান করে এটিকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করতে যা যা করা প্রয়োজন তা করা হবে। দেশের সকল প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো আরও আধুনিকায়ন করতে সরকারের অচিরেই সেই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর