করোনায় গত দুই ঈদে বিধি-নিষেধের কারণে ভ্রমণ পিপাসুদের ঘরবন্দি কাটাতে হয়েছে। আর এবার ঈদের দিনে ছিল বৃষ্টি। তবে ঈদের ৫ম দিনেও মুজিবনগর কমপ্লেক্সে ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়।
আবহাওয়া ভালো থাকায় বেলা বাড়ার সাথে সাথে স্বাধীনতার বিদ্যাপিঠ মুজিবনগরে দূর-দূরান্ত থেকেও দর্শনার্থীদের ঢল নামে। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ভিড় করছেন ঐতিহাসিক আম্রকাননে।
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরভিত্তিক বাংলাদেশের মানচিত্র, স্মৃতিসৌধ, আম্রকানন, মুক্তিযুুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন ম্যুরাল, গোলাপ বাগান, সরকারি শিশু পরিবার, শাপলা চত্বরসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে ঘুরে দেখছেন তারা।
পরিবার পরিজন নিয়ে কুষ্টিয়া থেকে আসা মিষ্টি ও মর্তুজা দম্পত্তি জানান, আমরা ঘুরার জন্য এই স্থানটিকে বেছে নিয়েছি বর্তমান প্রজন্মকে এর গুরুত্ব বোঝাতে।
দর্শনা থেকে আসা ফাহমিদা খানম ও প্লাবন জানান, আমার এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। তবে এখানে পর্যাপ্ত টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। নেই বাচ্চাদের বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা। আর যাতায়াত ব্যবস্থা আরো উন্নত হলে ভালো হতো।
যশোর থেকে আসা ইসরাত জাহান জানান, এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত। তারপর দূর থেকে এসে বিশ্রাম নেবার কোনো ব্যবস্থা নেই, মুজিবনগর কপ্লেক্সের দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার সদস্যদের দ্বারা দর্শনার্থীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
করোনার লাগাতার প্রকোপে গত দু’বছর পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্স। দর্শনার্থী না যাওয়ায় কমপ্লেক্সের ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের আয় রোজগারও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এ বছরের মৌসুমের শুরু থেকেই ঐতিহাসিক মুজিবনগরে দর্শনার্থীরা আসা শুরু করায় সবার মুখে হাসি ফুটেছে।
কমপ্লেক্সের ভাসমান ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছরের শুরু থেকেই প্রচুর পিকনিকের গাড়িসহ দর্শনার্থীরা মুজিবনগরে বেড়াতে আসা শুরু করেছে। তাই বেচাকেনাও মোটামুটি ভালো হচ্ছে। তাই এই ঈদ মৌসুমে গত বছরের লোকসান পুষিয়ে নেবার আশা করছেন কমপ্লেক্সের ইজারাদারসহ ভাসমান ব্যবসায়ীরা।
দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, আনসার সদস্য ও সাদা পোশাকের পুলিশ।
মেহেরপুর মুজিবনগর কমপ্লেক্সে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য দ্বায়িত্বরত আনসার ক্যাম্পের এপিসি আলী মোহাম্মদ জানান, কোনো দর্শনার্থী যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য আমরা সব সময় তৎপর রয়েছি। আমাদের এখানে ৭৩ জন আনসার সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন