কিরগিস্তানে পাচার হওয়া ১৩ বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছে মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোর। আজ রবিবার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক বিণয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, সাত মাস আগে মাহমুদুল হাসান মীর নামের একজন ব্যক্তি কিরগিস্তানে গার্মেন্টসে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন জেলার ১৪ জনের কাছ থেকে ৩ লাখ করে টাকা নেন। তাদের প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা শ্রমের বিনিময়ে ৬০০ আমেরিকান ডলার বেতনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
কিন্তু কিরগিস্তানে নিয়ে দালাল চক্র এই ১৪ জনকে ছোট একটি পোশাক কারখানার মালিকের কাছে বিক্রি করে দেয়। তাদের কোনরকম বেতনও দেওয়া হয়নি। বেতন চাইলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। সম্প্রতি সেখান থেকে ৬ জন ভিকটিম পালিয়ে কিরগিস্তানের একটি মানবাধিকার সংগঠন ওয়েসিস-এর শেল্টার হোমে আশ্রয় নেন। একজন ভিকটিম কোনরকমে পালিয়ে দেশে ফিরতে পেরেছেন। কিন্তু সাতজন ভিকটিম এখনও পাচারকারী চক্রের কাছে বন্দি অবস্থায় আছেন। ভিকটিমদের বেশিরভাগের বাড়ি কুমিল্লায়। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা ও নরসিংদীর একজন করে বাসিন্দা রয়েছেন।
বিণয় মল্লিক বলেন, ওয়েসিস-এ আশ্রয় নেওয়া ভিকটিমদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাইটস যশোরের কর্মকর্তারা কথা বলেছেন। এ সময় তারা তাদের সাথে প্রতারণার বিষয়টি তুলে ধরেন। বিণয় মল্লিক বলেন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়ে রাইটস যশোরের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, আইজিপি, তাসখান্দে নিযুক্ত বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর, কিরগিস্থানের কনস্যুলেটসহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখন দ্রুততার সাথে এ ১৩ জনকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের আন্তরিকতাপূর্ণ সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোর থেকে জানানো হয়েছে, কিরগিস্তানে শেল্টার হোমে আশ্রয় নেওয়া ৬ জন হলেন কুমিল্লার বুড়িচংয়ের মো. আসাদুজ্জামান, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের সজল মিয়া, নারায়ণগঞ্জ বন্দর এলাকার আমির হামজা, কুমিল্লার মুরাদনগরের মো. ওলিউল্লাহ ও দেবীদ্বারের মো. লিমন এবং চুয়াডাঙ্গার বিপুল হোসেন। এছাড়া পাচারচক্রের হাতে এখনও বন্দি আছেন কুমিল্লার চান্দিনার শরিফুল ইসলাম, মুরাদনগরের আলমগীর হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, আবু মুসা, জাহাঙ্গীর আলম, নরসিংগীর সামসুল ইসলাম ও চুয়াডাঙ্গার মো. নুরুজ্জামান।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর