কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাংয়ে যৌতুকের কারণে বিয়ে বন্ধ করে দেওয়ায় অভিযোগে কনের পিতার করা মামলায় বর এমরান উল্লাহকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার (১১ জুন) দুপুরে তাকে আটক করা হয়।
আটক বরের এমরান উল্লাহ ওই উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের কচুবনিয়া এলাকার আব্দুল মাজেদের ছেলে।
বাদী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার আসামি ইমরান উল্লাহ দুবাই প্রবাসে থাকাকালে কনেকে পছন্দ করার পর, ২০২১ সালের ৫ নভেম্বর বরের পরিবারসহ কনের বাড়িতে এসে শাহপরীরদ্বীপের ওই মেয়ের সাথে বিয়ের কথা ঠিকঠাক হয়। সেই সুবাদে কনের সাথে নিয়মিত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিও কলসহ কথাবার্তা বলত। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের সম্মতিতে গত ৯ জুন বিয়ের তারিখ নিদিষ্ট করা হয়। গত ২ জুন প্রবাস থেকে বর এমরান উল্লাহ ও তার ভাই জসিম দেশের বাড়িতে চলে আসে।
বর ও কনে পরিবারের সম্মতিক্রমে আলোচনার পর তাদের দাবিকৃত বিয়ের আসবাবপত্র, ওয়াশিং মেশিন, ফ্রিজ, বক্সখাট, সোফা, আলমারি, সুকেস, ওয়াড্রপ ইত্যাদি যাবতীয় ইলেকট্রনিক পণ্য, বিয়ের খরচসহ প্রায় ৮ লক্ষ টাকার আসবাবপত্র ক্রয় করে বর এমরান উল্লাহ বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি পূর্ব থেকে কনের বাড়িতে বিবাহের কার্ডে নির্ধারিত তারিখে ৮ জুন শাহপরীর দ্বীপের নিজ বাড়িতে প্রীতিভোজের আয়োজন করে মেহমানদের খাওয়ার পিছনে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা খরচ করা হয়।
পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সকালে বর পক্ষের বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের প্ররোচনায় অতি লোভের বশীভূত হয়ে পুনরায় একটি বিদেশি কোম্পানির মোটরসাইকেল FZS-V3 যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৪ লাখ টাকা দাবি করে। এরপরও কনের পিতা বরকে আড়াই লক্ষ টাকা দামের মোটরসাইকেল দেওয়ার জন্য সম্মতি প্রকাশ করেন। কিন্তু বরের পরিবার ৪ লক্ষ টাকা দামের মোটরসাইকেল না দিলে নববধূ হিসাবে গ্রহণ করবে না মর্মে হুশিয়ারি দেয়। এবং তাদের মেয়েকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরে মেয়ের বাবা আত্মীয় স্বজন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ অনুরোধ করার পরও তারা সাফ জানিয়ে দেয় চার লক্ষ টাকা দামের মোটরসাইকেল না দিলে বিয়ে হবে না। পরবর্তীতে এ ঘটনার বিষয়ে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করে তাদের পরামর্শক্রমে কনের পিতা শাহপরীরদ্বীপ মাঝের পাড়া এলাকার মৃত আজিত আল্লাহ ছেলে আব্দুল জাব্বার বাদী হয়ে বর সাবরাং ইউনিয়নের কচুবনিয়া এলাকার আব্দুল মাজেদের ছেলে মো. ইমরান প্রকাশ ইমরান উল্লাহকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে শনিবার (১১ জুন) টেকনাফ মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। যার মামলা নং-৪৪ ধারা ৪০৬/৪২০/৪২৭/৫০০/৪৩ সহ যৌতুক বিরোধী আইন ৩/৪ রুজু করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন মো. ছাবের, জসিম উদ্দিন, তৈয়বা খাতুন ও আব্দুল মাজেদ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টেকনাফ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরে আলম বলেন, পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে বর মো. এমরান প্রকাশ এমরান উল্লাহসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে যৌতুক নেয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। তাকে গ্রেফতার করে কক্সবাজার আদালতে পাঠানোর কার্যক্রম প্রক্রিধীন রয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল