বৃহস্পতিবার সারাদেশের ন্যায় বগুড়া জেলার ১০ উপজেলার ৩৫৪ পরিবারের মাঝে গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের গৃহ হস্তান্তর হয়েছে। এরই মধ্য দিয়ে জেলার দুটি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এর মধ্য দিয়ে দুপচাঁচিয়া ও নন্দীগ্রাম উপজেলা গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী-মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বাড়ি ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় সুবিধাভোগীদের হাতে জমির দলিল হস্তান্তর করেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো: জিয়াউল হক।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ, উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল হক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন জিহাদী।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বগুড়া সদর উপজেলা অডিটরিয়ামে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সদস্যদের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান সফিক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমর পাল, ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নুরুল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মনির। সদর উপজেলায় ৪০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়।
গাবতলী উপজেলায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাসুম আলী বেগসহ কর্মকর্তাগণ। জেলার অন্যান্য উপজেলায় অনুষ্ঠানে প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী-মুজিববর্ষ উপলক্ষে জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৪০টি গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবার দেওয়া হয়েছে জমিসহ আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর। মুজিববর্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের মধ্য দিয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হয়।
নন্দীগ্রাম উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রসাসক (রাজস্ব) উজ্জল কুমার ঘোষ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিফা নুসরাত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা, সাধারণ সম্পাদক মেয়র আনিছুর রহমান প্রমুখ।
সোনাতলায় ২৬ ভুমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ হস্তান্তর করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে সোনাতলা উপজেলার ২৬ টি ভুমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ হস্তান্তর করেন। সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত হন সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন।
জেলার সারিয়াকান্দির ভূমিহীন এবং গৃহহীন পরিবাবের মাঝে জমিসহ গৃহ হস্তান্তরের উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ হলরুমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১১৫ গৃহহীনদের জমিসহ ঘরের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হস্তান্তরর করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রেজাউল করিম। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৩য় পর্যায়ের ২য় ধাপে উপজেলার ফুলবাড়ী ইউপির ডোমকান্দি গ্রামে নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পের ১১৫ টি ঘর গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুম আলী বেগ জানান, ৩৫৪টি ঘরের মধ্যে আদমদীঘিতে ৩০টি, সদরে ৩৫, দুপচাঁচিয়ায় ১০, কাহালুতে ১২, নন্দীগ্রামে ৪০, সারিয়াকান্দিতে ১১৫, শাজাহানপুরে ৩৫, শেরপুরে ৪৫, শিবগঞ্জে ৬ ও সোনাতলায় ২৬টি গৃহ রয়েছে। এর আগে তৃতীয় পর্যায়ের প্রথম ধাপে ৯৩০ পরিবারকে গৃহ প্রদান করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ৩৫৯৩টি গৃহ নির্মাণ করেছে সরকার।
বগুড়া জেলা প্রশাসক মোঃ জিয়াউল হক জানান, দেশে কেউ ভূমিহীন, গৃহহীন থাকবেনা, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বগুড়া জেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক উপকারভোগী জমিসহ গৃহ, জমির দলিল ও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সনদ হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলার নন্দীগ্রাম ও দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দুই উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন। জেলায় এখনও ৪৮১ টি গৃহহীন পরিবারের তালিকা রয়েছে, তাদের ঘর নির্মাণ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বগুড়া জেলাকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে গৃহহীনমুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন