বগুড়ার আদমদীঘিতে রক্তদহ বিলের খালের উপড় নির্মিত বেইলি সেতুটি এখন জরাজীর্ণ। মাদকসেবীরা খুলে নিয়ে যাচ্ছে নাটবল্টু, পাটাতন উঠে যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছরেও কোন মেরামত না করায় এলাকাবাসীর জন্য দিনদিন মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। ১০ গ্রামের মানুষের জন্য চলাচলের ব্রিজটি এলাকাবাসী সংস্কার দাবি করেছে।
জানা যায়, জেলার আদমদিঘি উপজেলার কদমা মৎস্য খামারের কাছে ঐতিহাসিক রক্তদহ বিলের মূল খালের ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজটি ২০০৬ সালের ১৬ ই মার্চ উদ্বোধন করা হয়। ২০০৬ সালে সড়ক ও জনপদ বিভাগের তত্বাবধানে ৬০.৯৬ মিটার দৈর্ঘ্য স্টিল ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ব্রিজটি নির্মাণের ফলে বিল পাড়ের কদমা, করজবাড়ি, রামপুরা ও ময়ূর কাশিমালাসহ ১০ গ্রামের মানুষের জীবনযত্রার চিত্র বদলে যায়।
ব্রিজটি নির্মাণের পর কর্তৃপক্ষের নজরদারী ও সংস্কার কাজ না করায় পাটাতনগুলো নষ্ট হওয়ার ফলে দিন দিন ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ফলে ব্রিজটি নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। ব্রিজটি নির্জন এলাকায় হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে বর্তমানে কিছু নেশাখোর ব্যক্তি ব্রিজটির রেলিংয়ের এ্যাংগেল ও নাটবল্টু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এই ব্রিজ দিয়ে রিক্সা, ভ্যান, ইজিবাইক, সিএনজি, মোটরসাইকেল চলাচল করছে। ব্রিজটি মেরামতের অভাবে অচল হয়ে পড়লে ১০ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকবে না। এই পথ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে থাকে। রাতের বেলায় চলাচল করতে গিয়ে উঠে যাওয়া পাটাতানের সঙ্গে ধাক্কা লেগে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। নড়বড়ে হয়ে যাওয়া ব্রিজটি অতি দ্রুতার সঙ্গে মেরামত করা না হলে সে কোন সময় ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ে আদমদিঘি উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙ্গে পড়বে। ১০ গ্রামের মানুষ উপজেলা সদর থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ব্রিজের অভাবে প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে আবারো যোগাযোগ করতে হবে উপজেলা সদরের সঙ্গে।
সান্তাহার ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদুল হক টুলু বলেন, মানুষ এক সময় নৌকায় আবার কেউ কেউ পানিতে সাঁতার দিয়ে বিল পার হয়ে সান্তাহারে আসতো। এখানে ব্রিজ নির্মাণে সান্তাহার শহরের সাথে দু’পাড়ের মানুষের যোগাযোগ সহজ হয়। ফলে খুলে যায় ব্যবসা-ব্যাণিজ্যের দ্বার। সহজেই ট্রাক, ট্রাক্টর ও ট্রালিসহ বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে শষ্যসহ অন্যান সব মালামাল আনা নেয়া করতে পারেন। কিন্তু এখন ব্রিজের যে অবস্থা এতে মোটরসাইকেল নিয়ে পার হতেই ভয় লাগে। জনস্বার্থে ব্রিজটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান জানান, এই স্টিলের বেইলি ব্রিজটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতায় রয়েছে। তাই এর দেখভাল বা মেরামতের ব্যবস্থা তারাই নিবেন।
বগুড়া সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান জানান, জরাজীর্ণ সেতুগুলি পুনর্নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রাণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রস্তবনাটি পাশ হলেই দ্রুততার সঙ্গে দরপত্র আহ্বান করে ব্রিজটি মেরামত করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল