নাটোরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে লেবুর বাজার যেন নিম্নমুখী। হালি হিসেবে বিক্রি হওয়া লেবু এখন বিক্রি হচ্ছে কেজির ওজনে। এক কেজি লেবুর খুচরা মূল্য মাত্র ৫ টাকা। কিছুদিন ধরে নাটোরের বাগাতিপাড়ার তমালতলাসহ আশপাশের কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারে লেবুর আমদানি বেশি এবং ক্রেতা সংকটের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তমালতলা হাটে লেবু বিক্রি করতে এসেছিলেন বেগুনিয়া গ্রামের লেবুচাষি মকবুল হোসেন। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে তার বাগানে লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে। লেবু উত্তোলন করে আড়তে বিক্রি করতে গিয়েছিলেন। প্রতি কেজি দুই টাকা দাম ওঠায় সেখানে বিক্রি করেননি। পরে তমালতলা হাটে প্রতি কেজি মাত্র ৫ টাকা দরে দুই মণ লেবু ৪০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। প্রতি কেজিতে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি লেবু। এতে প্রতি লেবুর দাম পড়েছে মাত্র ২০ পয়সা থেকে ২৫ পয়সা।
সবজি ব্যবসায়ী কামাল জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় লেবুর সরবরাহ বেশি। সেকারণে দাম পড়ে গেছে। মাস দেড়েক আগেও তিনি প্রতি হালি লেবু বিক্রি করেছেন ১০ থেকে ২০ টাকা দরে। কিন্তু বর্তমানে ৫ টাকা কেজি দরে লেবু বিক্রি করছেন। নাটোরের এক ক্রেতা মোতালেব ইসলাম জানান, দাম কম হওয়ায় তিনি ৫ টাকা দিয়ে এক কেজি লেবু কিনেছেন।
লেবুচাষি মাহাবুর রহমান জানান, তার নিজের দুই বিঘা জমিতে লেবু বাগান রয়েছে। এলাচি ও চায়না থ্রি জাতের লেবু চাষ করেছেন। বাগানে বিপুল পরিমাণে লেবু ধরেছে। কিন্তু ক্রেতা নাই। বাইরে থেকেও তেমন ক্রেতা এ অঞ্চলে আসছে না। ফলে গাছ থেকে লেবু উত্তোলন না করায় বাগানেই মাটিতে পড়ে পচে যাচ্ছে।
লেবু ব্যবসায়ী মমতাজ উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে লেবু বিক্রি করে পরিবহন খরচই উঠছে না। উৎপাদন ও শ্রমিকের খরচ দিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সবজিসহ প্রায় সব জিনিসের দামই বাড়ছে। কিন্তু লেবুর দাম দিন দিন কমে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২২৫ বিঘা জমিতে লেবু চাষ হয়েছে। বাজারে আমদানি বেশি হওয়ার কারণে লেবুর দাম বর্তমানে কিছুটা কম।
বিডি প্রতিদিন/এমআই