গ্রাম বাংলার অতিপরিচিত গৃহপালিত প্রাণী মহিষ। এক সময় মহিষ হাল চাষের প্রধান মাধ্যম ছিল। গরুর থেকে মহিষ বেশী শক্তিশালী হওয়ায় মহিষের গাড়ি যাতাযাতের প্রধান বাহন ছিল। তবে বর্তমানে নীলফামারী থেকে মহিষ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
এক সময় গ্রামীণ জনপদের প্রত্যকটি পরিবারের কৃষকেরা মহিষ পালন করতো। এ মহিষ দিয়ে তারা কৃষি জমি চাষাবাদসহ মহিষের গাড়ি চালাতো। মহিষ পালন কমে যাওয়ায় বর্তমানে মহিষের গাড়ি এখন আর চোখে পরে না। আগের মতো হাটে-বাজারেও মহিষ বিক্রি হয় না। পাশাপাশি মহিষ বিলুপ্ত হওয়ায় এর দামও বেড়েছে। মহিষ দেখতে কালো, ধূসর অথবা বাদামী রঙ্গের হয়ে থাকে। মহিষ পালন তুলনামুলকভাবে সহজ ও কম ব্যয়বহুল। এছাড়া মহিষের রোগবালাইও কম হয়। বেশী গরম সহ্য করতে পারেনা বলেই মহিষ সাধারনত পানিময়, ছায়াযুক্ত জায়গায় থাকতে পছন্দ করে।
প্রবীন শিক্ষক আবু মুসা মাহামুদুল হক বলেন, মহিষ গরুর মতোই উপকারী প্রাণী। গরমের সময় এরা পানি ছাড়া থাকতে পারে না। কৃষি হালচাষ গাড়ি টানা, পণ্য পরিবহনের কাজে এই প্রাণীটিকে ব্যাবহার করা হত। শক্তিশালী পশু হিসেবে এদের পরিচিতি সর্বাধিক। এক সময় গ্রামাঞ্চলের কৃষকেরা মহিষ পালন করতো। সময়ের বির্বতনে গৃহস্থের গোয়ালে এখন আর মহিষ দেখা যায় না। কয়েকটি গ্রাম ঘুরেও এখন মহিষ চোখে পরে না। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে মহিষ এখন এক বিরল প্রজাতির প্রাণী।
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার পুর্বগোলমুন্ডা চারআনী গ্রামের কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, পুরো গ্রামে বর্তমানে আমদেরই দুটি মহিষ রয়েছে। ছোট বেলা থেকে দেখে এসেছি বাপ-দাদাদের সঙ্গী ছিল মহিষ। মহিষ দিয়ে অনেক মালবাহি গাড়ি টানা ও হাল চাষ করা হত। মহিষ আমাদের কৃষি পরিবারের জন্য উপকারী একটি প্রাণী। তবে মহিষ আজ আমাদের সংস্কৃতি থেকে হারাতে বসেছে। এক সময় এই গ্রামীণ জনপদে মহিষের বিচরণ থাকলেও চারণ ভুমির অভাবে বর্তমানে হারিয়ে যাচ্ছে এই প্রানীটি।
নীলফামারী প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের জেলা ট্রেনিং কর্মকর্তা ডা: মো: রাশেদুল হক বলেন, নীলফামারী জেলায় প্রায় ৬২৫টি মহিষ রয়েছে। মহিষ সংরক্ষনের জন্য সরকার প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মহিষ উন্নয়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়ে) গ্রহন করেছেন। এই প্রকল্পটি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পটির উদ্যেশ্য হল মহিষের উৎপাদন বৃদ্ধি করা । এর জন্য একজন কৃত্রিম প্রজনন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ