কুমিল্লার দেবিদ্বারে গোমতী নদীর উপরে নির্মিত খলিলপুর ব্রিজটির রেলিং না থাকার কারণে ব্রিজ পারাপারে ঝুঁকি বাড়ছে তিন উপজেলার ২৫ গ্রামের পথচারী ও যানবাহনের। শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিন্তিত শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
খলিলপুর ব্রিজ পরিদর্শনে দেখা যায়, ব্রিজের মাঝ বরাবর অধিকাংশ স্থান জুড়ে দুইপাশের রেলিং উধাও। রেলিংবিহীন ব্রিজের ফুটপাথ ধরে পারাপার হচ্ছে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের পাশ কাটিয়ে দ্রুত ছুটে যাচ্ছে অটো, সিএনজি আর মালবাহী পিকআপ ভ্যান। ব্রিজ থেকে পড়ে যাবার আশংকায় অনেকেই বড় ভাই বা মা-বাবার সাথে স্কুলে যায়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০০৫ সালে এ সেতুটি নির্মাণ হয়। নির্মাণকালে ত্রুটিপূর্ণ সেন্টারিংয়ের কারণে ১৩০ মিটার লম্বা সেতুটির মাঝের অংশ তখনই সামান্য দেবে যায়। সেই অবস্থায়ই ঠিকাদার নির্মাণ শেষ করে সেতুটি হস্তান্তর করে। বিগত সাত আট বছর যাবত রেলিংয়ের পলেস্তারা খসে পড়তে থাকে। ২০০৫ সালের ২৪ আগস্ট এ সেতুটির উদ্বোধন হয়। পর বিগত ১৭ বছরে সেতুটির কোনো সংস্কার না হওয়ায় ধীরে ধীরে প্রায় অর্ধেক রেলিংয়ের পলেস্তারা খসে পড়ে। আঁধারে রেলিং খুলে নিয়ে রড ভাংগারি দোকানে বিক্রয় করে দেয়।
খলিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম মুন্সী জানান, দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুল, একটি হাইস্কুল, ১টি কলেজসহ ৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্থানীয় শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ব্রিজটি দিয়ে পারাপার হয়। প্রাথমিক পর্যায়ের বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রিজটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। রেলিং না থাকায় অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পান।
ফতেহাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কেএম কামরুজ্জামান মাসুদ জানান, দেবিদ্বার উপজেলার সাথে পার্শ্ববর্তী বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কিছু এলাকার সাথে সড়ক যোগাযোগের মাধ্যম এই সেতুটি। বালিবাড়ি, হামলাবাড়ি, বারেরারচর, খলিলপুর, আশানপুর, জয়পুর, কামারচর, হেতিমপুর, নূরপুর, বড়কান্দা ও বুড়ির পাড়সহ প্রায় পঁচিশটি গ্রামের অর্ধ লক্ষ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি নিয়মিত ব্যবহার করেন। সেতুটির রেলিং নির্মাণ ও সংস্কার অত্যন্ত জরুরি।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. শাহালম জানান, খলিলপুর সেতুটি সংস্কারের বিষয়ে প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আগামী রবিবারে এ সেতুটির সার্বিক অবস্থান নিয়ে পর্যালোচনায় আমরা জরুরি বৈঠকে বসব। আশা করি খুব শিগগিরই এর কাজ শুরু করতে পারবো।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল