মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় কানুটয়ায় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আতর আলী লস্কর (৬৫) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। নিহত আতর আলী স্থানীয়ভাবে একজন আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে পরিচিত। গত ইউপি নির্বাচনে স্থানীয় দুই আওয়ামী লীগ নেতার সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
রবিবার বিকালে কানুটিয়া সাপ্তাহিক হাটে বাজার করতে এসে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন তিনি। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতাল, পরে অবস্থার অবনতি হলে রবিবার রাতে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। নিহত আলী আতর লস্কর মহম্মদপুরের বিনোদপুর ইউনিয়নের উরুরা গ্রামের মৃত যদন লস্করের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গত নভেম্বরে বিনোদপুর ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় এই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী ছিলেন দুই গ্রাম্য মাতবর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মনির মোল্যা ও মনিরুল বিশ্বাস। নির্বাচনে মনির মোল্যার সমর্থক ছিলেন আতর আলী। নির্বাচনে মনিরুল বিশ্বাস জয়ী হন। এ জয়-পরাজয় নিয়ে নির্বাচনের পর থেকে উভয় পক্ষে উত্তেজনা চলছিল। পাশাপাশি বেশ কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।
সর্বশেষ শুক্রবার স্থানীয় বেথুলিয়া বাজারের একটি চায়ের দোকানে উভয়পক্ষের সমর্থকদের আরেক দফা কথা কাটাকাটি হয়। যা নিয়ে শনিবার উভয়পক্ষের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সর্বশেষ এসব ঘটনা ও উত্তেজনার জের ধরেই রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আতর আলী লস্করকে কানুটিয়া হাটে প্রতিপক্ষ দুর্বৃত্তরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।
এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে আতর লস্করের মৃত্যু হয়।
মনিরুল বিশ্বাস ও মনির মোল্যা মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং নিহত আতর লস্কর আওয়ামী লীগ সমর্থক বলে জানিয়েছেন মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান।
নিহত আতর লস্করের বড় ছেলে উজ্জল লস্কর বলেন, ‘আমার বাবা নিরীহ প্রকৃতির বয়স্ক মানুষ। গ্রামে ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতা মনিরুল বিশ্বাস ও মনির মোল্যার মধ্যে আধিপত্যের বিরোধ চলে আসছে দীর্ঘদিন। এ বিরোধের জের ধরেই আমার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ইতিপূর্বে কয়েকবার তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল মনিরুল বিশ্বাস ও তার লোকজন। রবিবার প্রকাশ্য দিবালোকে হাটের মধ্যে শত শত লোকের সামনে আমার বাবাকে চিহ্নিত লোকজন নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কলিমুল্লাহ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে গ্রাম্য দলাদলি ও পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ ঘটনায় দুইজন আটক আছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
বিডি প্রতিদিন/এমআই