সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ফুলজোড় শাখা নদীর উপরে সড়াতৈল এলাকায় নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোত ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে নয়টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে। অর্ধশত বছর যাবত দুর্ভোগে পারাপার হলেও ব্রিজ নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেই।
এলাকাবাসী বলছেন, সাঁকো নির্মাণে মাটি পরীক্ষা করা হলেও আজও তা আলোর মুখ দেখছে না। এ অবস্থায় জরুরিভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী সড়াতৈল গ্রামের বাসিন্দারা জানান, প্রতিবছর জুন মাস থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত নদীতে পানি থাকে। নদী পারাপার হতে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরী করেন। আর এ সাঁকো দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে সড়াতৈল, পাঁচিলা, বাগদা, রশিদপুর, খাসচর জামালপুর এবং অলিপুর গ্রামের বাসিন্দাদের পারাপার হতে হয়। নদীর এপাড়ে অবস্থিত সড়াতৈল মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়, সড়াতৈল প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা, সড়াতৈল কেজি স্কুল, সিরাজগঞ্জ রোড, উল্লাপাড়া উপজেলা সদর, পৌর বাজার, সাব রেজিষ্ট্রি অফিস ও পাঁচিলা বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হয় মানুষকে। অনেক সময় স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই সাঁকো পার হতে গিয়ে নদীতে পড়ে আহত হয়। প্রতিদিন সহস্রাধিক লোক এই সাঁকো পার হন।
সড়াতৈল গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষাবিদ আব্দুল মান্নান তালুকদার এবং সমাজকর্মী বাবলা তালুকদার ও খাসচর জামালপুরের শিক্ষক শাহিন আলাম জানান, শাখা নদীর উপর একটি পাকা সেতু নির্মাণ করার জন্য স্থানীয় লোকজন বহুবার বহড়হর ইউনিয়ন পরিষদ এবং উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন জানিয়েছেন। কয়েক বছর আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল হাসান নান্নুর সহযোগিতায় উল্লাপাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বাঁশের সাঁকোর স্থানটি পরিদর্শন করে একটি ৬০ ফুট লম্বা গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প প্রস্তুত করে ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর সম্ভাব্য সেতু নির্মাণ স্থানের মাটিও পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু তারপর আর কোনো অগ্রগতি নেই। ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ায় অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ নিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, সড়াতৈল গ্রামের পাশে ফুলজোর শাখা নদীর উপর ৬০ ফুট লম্বা একটি গার্ডার সেতু নির্মাণের প্রকল্প প্রণয়ণ করে তা বাস্তবায়নের জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই সেতু নির্মাণ স্থানের মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। আগামীতে টেন্ডার আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে। আশা করছি চলতি বছরের শেষের দিকে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা যেতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল