দিনাজপুরে অবস্থিত বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরীর কর্মচারীদের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী এবং চারজন কর্মচারী আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় স্বপ্নপুরীর ৭ জন কর্মচারীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রবিবার দিবাগত সন্ধ্যা সোয়া ৬ টার দিকে নবাবগঞ্জের বিনোদনকেন্দ্র স্বপ্নপুরীতে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলো, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তালহা, আরাফাত, আল মামুন, ওমর ফারুক, তাওহিদুল, মবিনুর, জিন্নাহ, আশরাফুজ্জামান, মকছেদুল, বিনয় চন্দ্র, জাহিদুল আলম, প্রান্ত, সাকিব, বিনজন বসাক। আহত শিক্ষার্থীদের রবিবার রাত ৭ টায় পুলিশ উদ্ধার করে প্রথমে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং বাকিরা ফুলবাড়ী উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আফতাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল হক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, জবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ৭৩ জন শিক্ষার্থী চারদিনের শিক্ষাসফরে গত শনিবার উত্তরাঞ্চলে আসেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন ১০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তারা জয়পুরহাটের একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহিউদ্দিন মাহী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীসহ মোট ৮৩ জনের একটি দল ফিল্ড ওয়ার্কে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি পরিদর্শন শেষে রবিবার বিকালে বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরীতে আসি। সেখান থেকে পৌনে ছয়টায় জয়পুরহাটে ফেরার সময় বিনোদন কেন্দ্রের একটি রাইডে এক ছাত্রী তার ব্যাগ ফেলে আসেন। পরে আরেক ছাত্রীকে নিয়ে তিনি ব্যাগ আনতে যান। এ সময় ওই রাইডের দায়িত্বে থাকা কর্মচারী তাদের উত্ত্যক্ত করেন। ওই দুইছাত্রী বিষয়টি সহপাঠীদের জানালে তারা প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বিনোদনকেন্দ্রের কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। স্বপ্নপুরীর কর্মচারীরা দেশিও অস্ত্র (লাঠি-সোটা, রড) দিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করে। এতে ১০ শিক্ষার্থী আহতসহ কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিত হয়। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।
নবাবগঞ্জের আবতাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল হক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর রাতেই দুইপক্ষ বসলেও তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ বিষয়ে স্বপ্নপুরীর স্বত্বাধিকারী ও দিনাজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলওয়ার হোসেন জানান, রাইডে এক শিক্ষার্থী ব্যাগ রেখে চলে যায়। পরে আরেক শিক্ষার্থী ফেরত নিতে এলে কর্মচারীরা ব্যাগের প্রকৃত মালিককে ডাকতে বলেন। পরে তিনি এসে ব্যাগ ফেরত নেন। কিন্তু আগেরজনকে কেন ব্যাগ ফেরত দেওয়া হলো না এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ঝামেলা তৈরি করে। তিনি দাবি করেন, এখানে উত্ত্যক্তের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাদের মারধরে আমার কর্মচারীর ৬-৭জন আহত হয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। স্বপ্নপুরীর ৭ জন কর্মচারীকে জিঙ্গাসাবাদের জন্য পুলিশ নিয়ে গেছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল